জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) মেডিকেল সেন্টারটি নানা সমস্যায় জর্জরিত। উনিশ হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে একজন ডাক্তার দিয়েই চলছে চিকিৎসা সেবা।
বিশ্ববিদ্যালয়টি অনাবাসিক হওয়ায় ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় মেস ভাড়া নিয়ে থাকে শিক্ষার্থীরা। গ্রাম থেকে শহরে আসা অনেকেই নতুন পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে না পারায় সর্দি, জ্বর, ডায়রিয়া, জন্ডিসসহ নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছে জবি শিক্ষার্থীরা। ফলে চিকিৎসার জন্য মেডিকেল সেন্টারে গেলে হতাশ হয়ে ফিরে আসতে হয়।
অভিযোগ রয়েছে, মেডিকেল সেন্টারটিতে মাথাব্যথা, জ্বর ও ডায়রিয়ার ওষুধ ছাড়া কিছুই পাওয়া যায় না। চিকিৎসার জন্য গেলেও শিক্ষার্থীদের শুধু প্রেসক্রিপশন দিয়ে বাইরে থেকে ওষুধ কিনে খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসক। অনেক শিক্ষার্থী মেডিকেল সেন্টারটির কথাই জানে না।
এদিকে মেডিকেল সেন্টারটির জন্য বছরে মাত্র দুই লাখ টাকা বাজেট হওয়ায় প্রতি শিক্ষার্থীর চিকিৎসা সেবার জন্য বাজেট মাত্র দশ টাকা। ইতিহাস বিভাগের সাকিব বলেন, আমি আজ জ্বর, মাথা ব্যথা নিয়ে মেডিকেল সেন্টারে যাই, ম্যাডাম হাতে কয়েকটা ট্যাবলেট দিয়ে প্রেসক্রিপশন লিখে বাইরে থেকে ওষুধ কিনে খেতে বলেছেন।
সরেজমিনে মেডিকেল সেন্টারে গিয়ে দেখা যায়, দিন দিন মেডিকেল সেন্টারটির পরিসর ছোট হয়ে আসছে। আগে তিনটি কক্ষ থাকলেও এখন একটি কক্ষেই চিকিৎসার কাজ সারতে হচ্ছে। প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় অনেক চিকিৎসা সরঞ্জামই মেডিকেল সেন্টারটিতে নেই।
কক্ষটির একপাশে রোগীদের জন্য একটি শয্যা, বিপরীত পাশে একজন চিকিৎসক ও তার সহকারীর বসার জায়গা, ওষুধ রাখার জন্য একটি আলমারি ও একটি রেফ্রিজারেটর। সরঞ্জামাদির মধ্যে রয়েছে একটি করে ওজন ও প্রেশার মাপার যন্ত্র, একটি শয্যা ও একটি অ্যাম্বুলেন্স।
এ বিষয়ে ডা. মিতা শবনম বলেন, জবি মেডিকেল সেন্টারে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। আমি এখানে একা হওয়ার কারণে কষ্ট হয়ে যায়। আমার সাধ্য অনুযায়ী কাজ করতে চেষ্টা করি। আমি কর্তৃপক্ষকে চিকিৎসক ও চিকিৎসার সরঞ্জাম বাড়ানোর জন্য বারবার বলেছি। বিষয়টি তারা দেখছেন বলে আমাকে জানিয়েছেন। তিনি ওষুধ ও সেবা দেয়ার ব্যাপারে বলেন, পর্যাপ্ত ওষুধ বরাদ্দ না থাকায় রোগীদের সবসময় ওষুধ দেয়া সম্ভব হয় না। মেডিকেল সেন্টারের বাজেট বাড়ালে এবং প্যাথলজিক্যাল যন্ত্রপাতি বাড়ালে এখানে আরো সেবা দেয়া সম্ভব।
মেডিকেল সেন্টারটির দুরবস্থার কথা স্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, মেডিকেল সেন্টার করার মতো পর্যাপ্ত জায়গা এখানে নেই। তবে কেরানীগঞ্জে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জমি ক্রয় করেছি। সেখানে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য যা যা দরকার তার সবকিছু করা হবে।
বিবার্তা/আদনান/জহির
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]