শিরোনাম
জবির ১১ শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগে তিন পুলিশ ক্লোজ
প্রকাশ : ১০ জানুয়ারি ২০১৯, ১০:০৯
জবির ১১ শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগে তিন পুলিশ ক্লোজ
জবি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

চাঁদা না দেয়ায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ১১ শিক্ষার্থীকে থানায় নিয়ে রাতভর নির্যাতনের অভিযোগে ৩ পুলিশ সদস্যকে ক্লোজ (প্রত্যাহার) করা হয়েছে।


একইসাথে ঘটনা তদন্তের জন্য এডিসি নুরুল আমিনকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ঘটনার সাথে জড়িত তিন পুলিশকে সদস্যকে প্রত্যাহার করেন ওয়ারী জোনের ডিসি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন।


এদিক এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে ও জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শিক্ষার্থীরা উপাচার্য বরাবর লিখিত আবেদন করেন।


গত মঙ্গলবার রাত ১টায় ওয়ারী থানায় এএস আই নজরুল ইসলাম ও তার টিমের নেতৃতে শিক্ষার্থীদের নির্যাতন চালানো হয়। বুধবার সকাল ৭টায় তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। এই ঘটনার প্রতিবাদে সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত সদরঘাট-গুলিস্তান সড়কের রায়সাহেব বাজার চার রাস্তার মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।


জানা গেছে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী মহিদুল ইসলাম ও অ্যাকাউন্টিং বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী নিক্সন ক্যাম্পাস থেকে বাসায় ফেরার সময় গোয়ালঘাট লেনে রাজধানীর ওয়ারী থানার পুলিশ এএসআই নজরুল ইসলাম তাদের সন্দেহমূলক তল্লাশি করেন।


এ সময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পরিচয় দিলে তাদেরকে ইয়াবা ও মাদকের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত আছে বলে দাবি করেন। এমনকি থানায় নিয়ে মাদক মামলার ভয় দেখান এবং ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন।


শিক্ষার্থীদের কাছে যথেষ্ট টাকা না থাকায় এএসআই নজরুল ইসলাম তাদের সিনিয়র কাউকে টাকা নিয়ে আসার জন্য বলেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ জন শিক্ষার্থী খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এ সময় তারা দুই শিক্ষার্থীকে আটক করার কারণ জানতে চাইলে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে এসআই আব্দুল আওয়াল ও এএসআই নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে সবাইকে পুলিশের ভ্যানে উঠিয়ে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাদের থানায় বেধড়ক মারধর ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করে পুলিশ।


এদিকে শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের খবর ছড়িয়ে পড়লে সকাল ৮টা থেকে শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করে। এ সময় সদরঘাট-গুলিস্তান সড়কে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। পরে আটককৃত শিক্ষার্থীদের ছেড়ে দেয়া ও অপরাধীদের শাস্তির ব্যবস্থা নিতে প্রশাসন আশ্বাস দিলে তারা অবরোধ ছেড়ে দিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে যান।


ওয়ারী জোনের এডিসি নুরুল আমিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের কথা স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি বলেন, ওয়ারী জোনের ডিসি আমাকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। এছাড়া ৫ কার্যদিবসের মধ্য সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেন।


তিনি আরো বলেন, এই ঘটনায় ইতোমধ্যে ওয়ারী থানার ডিউটি অফিসার এসআই অপু, এসআই আব্দুল আওয়াল ও এ এস আই নজরুল ইসলামকে প্রাথমিকভাবে প্রত্যাহার করা হয়েছে।


শিক্ষার্থীদের উপর নির্যাতনের বিষয়ে জবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া কোনো শিক্ষার্থীকে আটক করা বেআইনি। এছাড়া তাদের মারধর করা চরম অন্যায়। আমরা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে নালিশ করেছি। বৃহস্পতিবার ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ডিএমপি কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হবে।


বিবার্তা/আদনান/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com