গত ১৭ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০তম সিন্ডিকেট সভায় এডিশনাল রেজিস্ট্রার/সমমানের ০৮টি পদ সৃষ্টি করা হয়। তবে এখন পর্যন্ত কেউ নিয়োগপ্রাপ্ত হয়নি সেই পদে। শনিবার ৬১তম সিন্ডিকেট সভায় পদন্নোতি প্রাপ্তরা মনোনীত হলে সেই পদের দায়িত্ব গ্রহণ করবে। যেখানে পদন্নোতি প্রাপ্তরা দায়িত্ব পাবেন এডিশনাল রেজিস্ট্রার/সমমানের পদে, যা ইউজিসির প্রণীত নিয়মের সাথে সাংঘর্ষিক।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) খন্দকার হামিদুর রহমান ও একই বিভাগের সহকারী পরিচালক হাছিনা পারভীন কর্তৃক স্বাক্ষরিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পদ ছাড়করণ প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত সাধারণ শর্তসমূহের মধ্যে ‘গ’-তে লিখিত আছে শিক্ষক কর্মকর্তার ক্ষেত্রে সকল শূন্য পদ উন্মুক্ত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে এবং ‘ঙ’-তে লিখিত আছে যে কোনো শূন্য পদের বিপরীতে আপগ্রেডেশন দেয়া যাবে না। নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন সৃষ্ট এডিশনাল রেজিস্ট্রার/সমমানের পদে কেউ নিয়োগপ্রাপ্ত নেই তাই ইউজিসির শর্ত অনুযায়ী (ঙনং শর্ত মতে) শূন্য পদে কর্মকর্তাদের আপগ্রেডেশন সম্ভব নয়।
অন্যদিকে আপগ্রেডেশনের অন্য নিয়ম অনুযায়ী ডেপুটি রেজিস্ট্রার-এ উন্নীত হতে হলে ১০ বছর ও সেখান থেকে এডিশনাল রেজিস্ট্রার বা সমমান পদে দায়িত্ব প্রাপ্ত হতে হলে কমপক্ষে ৬ বছর কর্মরত থাকার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। সেই সাথে শূন্য পদে নিয়োগ ব্যতীত আমাদের এখানে আপগ্রেডেশন হয়নি। আর সেটা হলে ইউজিসি’র নিয়ম বহির্ভূত হবে। ইউজিসি থেকে ছাড়পত্র এনে পরবর্তীতে নিয়োগ করা যায় এমনটাই জানিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান।
আপগ্রেডেশনের বিষয়ে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. হুমায়ুন কবীর বলেন, অন্যান্য পদের আপগ্রেডেশনের মতোই এটা। শূন্য পদের বিপরীতে এই আপগ্রেডেশন নয়। ওই পদ শূন্যই থাকবে। আপগ্রেডেশনের মধ্য দিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই এডিশনাল রেজিস্ট্রার/সমমানের পদে উন্নীত হওয়া যায়। শূন্য পদ এখানে সমস্যা নয়। আর এডিশনাল রেজিস্ট্রার/সমমানের পদে দায়িত্ব প্রাপ্ত হতে হলে ১২ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
নতুন সৃষ্ট এই পদ ইউজিসি কর্তৃক ছাড়কৃত কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার বলেন, ইউজিসি ছাড়কৃত বলেই হচ্ছে। তবে রেজিস্ট্রার দফতরের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে এই আপগ্রেডেশন নিয়ে কোনো ছাড়পত্র আসেনি।
অন্যদিকে গত ৬ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭ কর্মকর্তা স্বাক্ষরিত একটি চিঠি পাঠানো হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও সভাপতি, নীতিমালা প্রণয়ন কমিটি বরাবর। যেখানে তারা দাবি করে ইউজিসির নিয়ম অনুযায়ী এই পদে আপগ্রেডেশন করার কোনো সুযোগ নেই। আর যে প্রক্রিয়ায় আপগ্রেডেশন করা হচ্ছে তা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃক ছাড়কৃত নয়। এমনকি কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি পর্যন্ত করা হয়নি তাই এই আপগ্রেডেশন প্রক্রিয়া সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন তারা।
এবিষয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি তপন কুমার সরকার বলেন, এই প্রক্রিয়াটি বিতর্কের সৃষ্টি করেছে যার কোনো দায় আমাদের পড়ে না।কেন না বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো নিয়ম সংশোধন বা পর্যালোচনা করা হলে সেখানে শিক্ষক প্রতিনিধি থাকে কিন্তু এই আপগ্রেডেশনের নিয়ম নিয়ে সভায় আমাদের কোনো প্রতিনিধি রাখেনি। তারা নিজেরাই এমনটা করেছে। আর তাই তাদের মধ্যেই নিয়ম তান্ত্রিক জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।
উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়টি ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত। সদ্য ১২ বছরে পা দেয়া বিশ্ববিদ্যালয়টির পদন্নোতি’র ক্ষেত্রে যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে তার সমাধান আনতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার বয়স, উল্লেখিত অভিজ্ঞতার বয়সের হিসাব, ইউজিসির নিয়োগ ও আপগ্রেডেশনের নিয়ম সেই সাথে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান নিয়ম।
বিবার্তা/পাভেল/জহির
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]