শিরোনাম
কোন দেশে লেখাপড়ার খরচ কত, কতক্ষণ থাকতে হয় স্কুলে?
প্রকাশ : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৯:৩৬
কোন দেশে লেখাপড়ার খরচ কত, কতক্ষণ থাকতে হয় স্কুলে?
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

বাংলাদেশে জানুয়ারিতে হলেও এই সেপ্টেম্বর মাসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শিক্ষার্থীরা স্কুলে তাদের নতুন ক্লাস শুরু করেছে। জানতে কি ইচ্ছা হয়, কোন দেশে শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বেশি সময় কিম্বা সবচেয়ে কম সময় স্কুলে থাকতে হয়? কোন দেশের অভিভাবকদেরকে তাদের সন্তানদের লেখাপড়ার পেছনে খরচ করতে হয় সবচেয়ে বেশি অর্থ?


নিচে সারা বিশ্বের এরকম কিছু পরিসংখ্যান ও তথ্য তুলে ধরা হলো-


যুক্তরাষ্ট্রে কিন্ডারগার্টেন থেকে মাধ্যমিক স্কুলের একজন শিক্ষার্থীর পেছনে গড়ে একটি পরিবারের খরচ হয় ৬৮৫ ডলার। গত এক যুগে এই খরচ বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। এই হিসেবে সব খরচ এক সাথে যোগ দিলে যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৮ সালের শিক্ষা বছরে অভিভাবকদের মোট খরচের পরিমাণ দাঁড়াবে ২,৭৫০ কোটি ডলার।


লেখাপড়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি খরচ হয় কম্পিউটারের পেছনে। প্রত্যেক পরিবারে এই খরচ ২৯৯ ডলার। তারপরে রয়েছে স্কুলের পোশাক-আশাক বা ইউনিফর্ম, ২৮৬ ডলার। ট্যাবলেট ও ক্যালকুলেটরের মতো ইলকেট্রনিক যন্ত্রপাতি কিনতে লাগে ২৭১ ডলার।


সবচেয়ে কম অর্থ খরচ হয় যেসব জিনিসের পেছনে তার মধ্যে রয়েছে ফাইল, ফোল্ডার, বই, হাইলাইটারসহ অন্যান্য সামগ্রী। এসব জিনিসের পেছনে খরচ ১১২ ডলার।


বলা হচ্ছে, আগামীতে যে এই খরচ আরো বাড়বে এবং তারও পরে আরো বাড়তেই থাকবে সেটা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।


বছরে কতক্ষণ থাকতে হয় স্কুলে


গবেষণায় দেখা গেছে, ৩৩টি উন্নত দেশের মধ্যে রাশিয়ায় শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে কম সময় স্কুলে কাটাতে হয়। এক বছরে তারা স্কুলে থাকে ৫০০ ঘণ্টার মতো (কিন্তু আন্তর্জাতিক গড় হচ্ছে ৮০০ ঘণ্টা)।


তার মানে রাশিয়ায় একজন শিক্ষার্থীকে প্রতিদিন গড়ে পাঁচ ঘণ্টার মতো স্কুলে কাটাতে হয়। স্কুল খোলা থাকে আট মাস। কিন্তু তার ফলে লেখাপড়ায় যে রাশিয়া পিছিয়ে পড়ছে তা নয়। রাশিয়ায় সাক্ষরতার হার ১০০%।


তারপরের অবস্থানে রয়েছে ডেনমার্ক। সেখানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকে ক্লাসে কাটাতে হয় বছরে ১,০০০ ঘণ্টা। অর্থাৎ রাশিয়ার শিক্ষার্থীদের তুলনায় তাদেরকে দু'মাস বেশি ক্লাস করতে হয়। ডেনমার্কে শিক্ষার্থীদেরকে প্রতিদিন লম্বা সময় স্কুলে থাকতে হয়।


ইউরোপীয় ইউনিয়নের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থা তাদের সদস্য দেশগুলোর শিক্ষার মান নিয়ে যে জরিপ পরিচালনা করে থাকে তাতে দেখা যায় ডেনমার্কের অবস্থান তালিকার শীর্ষস্থানীয় পাঁচটি দেশের ভেতরে। তার অর্থ কেউ কেউ এভাবেও ব্যাখ্যা করতে পারেন যে বেশি সময় ধরে স্কুলে থাকলে তার একটা উপকারিতাও হয়তো থাকতে পারে।


সস্তায় লেখাপড়ার কথা ভাবছেন?


সন্তানকে কোন দেশে লেখাপড়া করাচ্ছেন তার ওপর নির্ভর করছে মোট খরচ কতো হতে পারে। দেশভেদে এ পার্থক্য এক লাখ ডলারও ছাড়িয়ে যেতে পারে।


স্কুলের বেতন, বইপত্র কেনা, স্কুলে যাওয়া আসার খরচ, থাকা খাওয়া - সব একসাথে যোগ করলে হংকং-এ প্রাথমিক স্কুল থেকে কলেজ পর্যন্ত যতো খরচ হয় সেটা সবচেয়ে বেশি। অর্থাৎ স্কুলে লেখাপড়ার জন্যে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহর হংকং।


হংকং-এ বৃত্তি, ঋণ, রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা এসব বাদ দিলেও একজন শিক্ষার্থীর পেছনে অভিভাবকদেরকে পকেট থেকে খরচ করতে হয় আরো এক লাখ ৩১ হাজার ১৬১ ডলার।


তারপরেই রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। সেখানে অভিভাবকদের খরচ হয় ৯৯ হাজার ডলার। সিঙ্গাপুরে ৭১ হাজার ডলার। যুক্তরাষ্ট্রে ৫৮ হাজার ডলার।


যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়ার খরচ বেড়েছে। দেশটিতে অভিভাবকরা গড়ে মোট খরচের ২৩% পরিশোধ করেন নিজেদের পকেট থেকে। কিন্তু ফ্রান্সে একটি পরিবারকে তাদের সন্তানের শিক্ষা জীবনের পেছনে খরচ করতে হয় ১৬ হাজার ডলার।


পেন্সিলের পেছনে খরচ


এখনকার সময় ভার্চুয়াল রিয়েলিটি, থ্রি ডি প্রিন্টিং এবং ড্রোনের যুগ হলেও সারা পৃথিবীতে সামান্য একটি পেন্সিলের পেছনে খরচ হয় প্রচুর অর্থ। ধারণা করা হয়, পেন্সিল উদ্ভাবিত হয়েছিল ৪০০ বছর আগে। কিন্তু এখনও প্রতি বছর দেড় হাজার থেকে দু'হাজার কোটি পেন্সিল উৎপাদন করা হয়।


যুক্তরাষ্ট্রে পেন্সিল তৈরির জন্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে সেডার গাছের কাঠ। এই গাছটি পাওয়া যায় উত্তর-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় বনাঞ্চলে। আর যে গ্রাফাইট দিয়ে পেন্সিলের শীষ তৈরি হয় তার বেশিরভাগই আসে চীন ও শ্রীলঙ্কার খনি থেকে।


এক হিসেবে দেখা গেছে, সারা বিশ্বে এক বছরে পেন্সিলের চাহিদা মেটাতে ৬০ হাজার থেকে ৮০ হাজার গাছ কাটতে হয়।


কতো লম্বা স্কুলজীবন


জীবনের এক পর্যায়ে এসে স্কুলের লেখাপড়া শেষ হয়ে যাওয়ার কথা, কিন্তু নিউজিল্যান্ড কিম্বা আইসল্যান্ডের মতো দেশে এই স্কুল জীবন প্রায় দুই দশকের মতো লম্বা।


তবে জীবনের সবচেয়ে বেশি সময় স্কুলে লেখাপড়া করে অস্ট্রেলিয়ার মানুষ। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত লাগে ২২ বছর ৯ মাস সময়। ছ'বছর বয়সে স্কুল শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া শেষ হয় ২৮ বছর বয়সে।


আর সবচেয়ে তাড়াতাড়ি পড়ালেখা শেষ হয়ে যায় আফ্রিকার দেশ নাইজেরে। সেখানে শিশুরা পড়া শুরু করে সাত বছর বয়সে। গড়ে তারা স্কুলে কাটায় পাঁচ বছর তিন মাস। সূত্র : বিবিসি


বিবার্তা/হুমায়ুন/কাফী

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com