শিরোনাম
‘কটূক্তির জন্য ড. আকমলকে ক্ষমা চাইতে হবে’
প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০১৮, ১৮:১৯
‘কটূক্তির জন্য ড. আকমলকে ক্ষমা চাইতে হবে’
ঢাবি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

কোটা আন্দোলনে যুক্ত নিপীড়নবিরোধী শিক্ষকদের সমাবেশে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগ তুলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আন্তর্জাতিক সর্ম্পক বিভাগের শিক্ষক ড. আকমল হোসেনকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।


ক্ষমা না চাইলে তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার কথাও জানিয়েছে সমিতি।


বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এ হুঁশিয়ারির কথা জানান সমিতির শিক্ষকরা।


মানববন্ধনে শিক্ষক সমিতির সভাপতি এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, অধ্যাপক আকমল হোসেন যে ধরনের বক্তব্য দিয়েছে, তার মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধকে অবমাননা করা হয়েছে। তিনি তার ৩৭ বছরের শিক্ষকতায় জীবনে কী পড়িয়েছেন তা খতিয়ে দেখবে শিক্ষক সমিতি। আমরা আকমলকে তার দেয়া বক্তব্যের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে বলবো এবং তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি। তা না হলে শিক্ষক সমিতি কঠোর আন্দোলনে যাবে।


কোটা আন্দোলন নিয়ে অধ্যাপক মাকসুদ কামাল বলেন, আমরা আশঙ্কা করেছি কোটা আন্দোলন এ দেশের ছাত্রদের অধিকারের আন্দোলন নয়। কোটা আন্দোলন হলো নির্বাচনের বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করে রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমতা নেয়া যায়, তার আন্দোলন। এ আশঙ্কা আমরা সেদিন থেকে করেছিলাম। আর সেদিনকার হাততালি থেকে সে আশঙ্কা প্রমাণিত হলো।


তিনি বলেন, কোটা আন্দোলনের ভেতর জামায়াত-বিএনপি ঢুকেছে। আয়োজকরা অধ্যাপক আকমলের বক্তব্যের পরে কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। অধ্যাপক আকমল হোসেন যে অপরাধে অপরাধী আয়োজকরাও একই অপরাধে অপরাধী। আয়োজকরা তাদের বসিয়ে রেখে হাত তালি দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন। এই হাততালি ছাত্র শিবির বিএনপি-ছাত্রদলের হাততালি।


বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সরকারের প্রতি তিনি কটূক্তিকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানান।


সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আ ক ম জামাল উদ্দীন বলেন, একজন সিনিয়র অধ্যাপক হিসেবে তার এ ধরনের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাই। এই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ঢাবি প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি।


ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলামের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নিজামুল হক ভুইয়া, সমাজবিজ্ঞান বিভাগে অধ্যাপক আ ক ম জামাল উদ্দীন, টেলিভিশন, চলচ্চিত্র ও ফটোগ্রাফি বিভাগের অধ্যাপক আ জ ম শফিউল আলম ভুঁইয়া, সুফিয়া কামাল হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাবিতা রেজওয়ানা রহমান, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক মু. আব্দুর রশীদ, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন প্রমুখ।


উল্লেখ্য, গত ১৯ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা-মামলার প্রতিবাদে নিপীড়নবিরোধী শিক্ষকরা সংহতি সমাবেশ করেন। সেখানে সংহতি জ্ঞাপন করে বক্তব্য দেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক আকমল হোসেন।


ওই সমাবেশে অধ্যাপক আকমল হোসেন বলেন, আমার প্রশ্ন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী তিনি কি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন? তার পিতা যিনি এই আন্দোলনের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব যার মাধ্যমে তৈরি হয়েছিল, তিনি কি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন? তা হলে মুক্তিযুদ্ধের অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই যে বিচার করা- কে অংশগ্রহণ করতে পারবে, কে প্রতিবাদ করতে পারবে, কে অন্যায় করতে পারবে সেটা আমার মনে হয় অত্যন্ত নেতিবাচক চিন্তা। তার এ বক্তব্যকে ঘিরে সমালোচনার ঝড় ওঠে।


বিবার্তা/রাসেল/কাফী

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com