শিরোনাম
ঢাবির সেই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি
প্রকাশ : ২৮ মে ২০১৮, ২২:৪৮
ঢাবির সেই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি
ঢাবি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খানকে বঙ্গবন্ধুকে অবমাননা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক অব্যাহতির পর এবার তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।


সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের সভায় উক্ত ঘটনার জন্য প্রো উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. কবি সামাদকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা হলো অধ্যাপক রহমত উল্লাহ, অধ্যাপক মাকসুদ কামাল, অধ্যাপক হাসানুজ্জামান এবং সিন্ডিকেট সদস্য বাহলুল মজনুন চুন্নু।


প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২৬মার্চ তারিখে অভিযুক্ত ঢাবি অধ্যাপক ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সহ-সম্পাদক অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান দৈনিক নয়াদিগন্ত পত্রিকায় বঙ্গবন্ধুকে অবমাননা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করেন।


এক নিবন্ধে তিনি লেখেন, আওয়ামী নেতাদের বেশির ভাগই তাদের পরিবার-পরিজনসহ ভারতে চলে গেলেন, এ দেশবাসীকে মৃত্যুর ফাঁদে ফেলে দিয়ে নেতৃত্বহীন অবস্থায়। যাকে ঘিরে এ দেশের মানুষ মুক্তির স্বপ্ন দেখতো সেই শেখ মুজিবুর রহমানও। স্বাধীনতার ডাক এসেছিলো শেখ মুজিব গ্রেফতার হওয়ার পর, তার আগে নয়। আমার জানা মতে তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি।


এর আগেও ২০১৬ সালের ৩০ মে দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকায় ‘স্মৃতিময় জিয়া’ শিরোনামের প্রবন্ধে অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণায় বঙ্গবন্ধুর কথা উল্লেখ করেননি।


তিনি লেখেন, ‘প্রিয় দেশবাসী, আমি মেজর জিয়া বলছি। আমি বাংলাদেশের ফোর্সের সুপ্রিম কমান্ডার ও রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করছি।’


অথচ জিয়াউর রহমান গ্রেট লিডার শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। একই প্রবন্ধে তিনি জিয়াউর রহমানকে প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে উল্লেখ করেন।


গত ২৬ মার্চ ইতিহাস বিকৃতির ঘটনায় চারিদিকে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। ছাত্রলীগ ২৭ মার্চ বিক্ষোভ করে। একই দিন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি এক জরুরী সভায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও সরকারের কাছে ইতিহাস বিকৃতি প্রদানকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানায়।


এইদিন অধ্যাপক মোর্শেদ এক বিজ্ঞপ্তিতে এই লেখার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। কিন্তু তিনি তার ‘স্মৃতিময় জিয়া’ প্রবন্ধে ইতিহাস বিকৃতির জন্য কোনো ক্ষমা প্রার্থনা করেননি।


২৮ মার্চ ছাত্রলীগ অধ্যাপক মোর্শেদকে বরখাস্তসহ তিনদফা দাবিতে উপাচার্যকে স্মারকলিপি দেয়। তাদের অন্য দাবিগুলো ছিল আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করা এবং অভিযুক্ত শিক্ষককে জাতির কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া।


এসব ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গত ২ এপ্রিল ওই অধ্যাপককে সাময়িক অব্যাহতি দিয়ে সিন্ডিকেটে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানায়।


২৮ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের সভা হয়। সভায় সাদা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোর্শেদ হাসান খানের ইতিহাস বিকৃতির ঘটনার প্রসঙ্গ উঠালেও উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান সিন্ডিকেট থেকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি নিয়ে কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করেনি।


আর তদন্ত কমিটি গঠন না করায় চারিদিকে উপাচার্যের সমালোচনা শুরু হয়।


অবশেষে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের সভায় উক্ত ঘটনার জন্য চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠিত হলো।


বিবার্তা/রাসেল/সোহান

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com