কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের নিরাপত্তা চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ১৯ জন শিক্ষক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের কাছে খোলা চিঠি লিখেছেন।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের এই নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে অনেক শিক্ষকই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ১৯ জন শিক্ষক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের কাছে খোলা চিঠি লিখেছেন। তারা বুধবার দুপুরে তার দপ্তরে গিয়ে দেখা করেন ও চিঠিটি জমা দেন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের কোটাসংস্কার আন্দোলনের বিপরীতে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা আসার পর আন্দোলন একটি পর্যায় পেরিয়েছে এবং এর পরবর্তী পদক্ষেপ হওয়া উচিত সরকারি গেজেট প্রকাশ। কিন্তু নানান সূত্রে জানা যাচ্ছে তার আগেই আন্দোলনকারীদের ওপর নানান চাপ আসছে। ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভয়-ভীতি কাজ করছে। অনেকে ছাত্রাবাসে থাকতে অস্বস্তি বোধ করছেন। এই ভীতি সুফিয়া কামাল হলে সবচেয়ে বেশি কাজ করছে। বিশেষত আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী তিন শিক্ষার্থীকে ডিবি পুলিশ ‘তুলে নিয়ে যাওয়ার’ ঘটনার পর থেকে এই অস্বস্তি বেড়েছে। ক্যাম্পাসে বিরাজ করছে চাপা উৎকণ্ঠা।
শিক্ষকেরা মৌখিকভাবেও তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং উপাচার্য তাদের উদ্বেগকে আমলে এনে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি যথাযথভাবে দেখভাল করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন।
শিক্ষকরা তাদের চিঠিতে উপাচার্য ভবনে হামলার জন্য নিন্দা জানান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন ও মর্যাদা অক্ষুণ্ন রাখার জন্য হলেও এই হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনার জন্য অনুরোধ জানান। পাশাপাশি ৮ এপ্রিল শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও তার পরে ক্যাম্পাসে বিপুল পরিমাণে বহিরাগতের অনুপ্রবেশ নিয়েও তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
তারা চিঠিতে বলেন, অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা, সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট ঘিরে আইসিটি আইনে মামলা, ছাত্র নেতৃবৃন্দকে ডিবি পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতার ইত্যাদির মাধ্যমে ভীতির পরিবেশ তৈরী হচ্ছে। তারা এই পরিবেশ দূর করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানান। ছাত্রাবাসগুলো পরিচালনার বিষয়টি ছাত্র সংগঠনের স্থলে শিক্ষকদের বা হল-প্রশাসনের আওতায় ফিরিয়ে আনার জন্যও অনুরোধ জানান। বিশ্ববিদ্যলয়ের পরিবেশ স্বাভাবিক ও সুষ্ঠু রাখার জন্য, ডাকসু নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন সংগঠন ও নির্দলীয় শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি নিয়ে পূর্বের পরিবেশ পরিষদের মতো কেন্দ্রীয়ভাবে ও হলসমূহে কমিটি গঠনের পরামর্শ দেন তারা।
খোলা চিঠিতে স্বাক্ষরকারী শিক্ষকরা হলেন এম এম আকাশ, গীতি আরা নাসরীন, ফাহমিদুল হক, মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান, সামিনা লুৎফা, মোহাম্মদ আজম, মোশাহিদা সুলতানা, কাজী মারুফুল ইসলাম, রোবায়েত ফেরদৌস, সায়মা আহমেদ, মুনাসির কামাল, সাজ্জাদ এইচ সিদ্দিকী, রুশাদ ফরিদী, মো. সেলিম হোসেন, হুমায়ুন কবীর, আব্দুর রাজ্জাক খান, সালমা চৌধুরী, দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন ও অতনু রাব্বানি।
বিবার্তা/বিজ্ঞপ্তি/কাফী
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]