শিরোনাম
জাবিতে ভর্তি নিয়ে জালিয়াতি, ছাত্র বহিষ্কার
প্রকাশ : ১৮ জানুয়ারি ২০১৮, ১২:০৮
জাবিতে ভর্তি নিয়ে জালিয়াতি, ছাত্র বহিষ্কার
সাভার প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) মোফসেনা ত্বাকিয়া নামে এক ছাত্রীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তি হতে সহযোগিতা করায় সাহেদ ইসলাম ওরফে আল-আমিন নামে এক ছাত্রকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।


ওই ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুগোল ও পরিবেশ বিভাগের ৪২তম আবর্তনের ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিসিপ্লিন বোর্ডের মিটিংয়ের পর এক জরুরি সিন্ডিকেট বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দিক।


তিনি বলেন, জালিয়াতির সাথে সম্পৃক্ত থাকায় আল-আমিনের নামে মামলা করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়া সুষ্ঠ তদন্তের জন্য ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের অধ্যাপক রাশেদা আক্তারকে প্রধান করে চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে ৩ সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।


আর ত্বাকিয়ার ব্যাপারে কি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আপাদত মেয়েটিকে অভিভাবকের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে।


ত্বাকিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের ৪৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী পরিচয়ে উক্ত বিভাগে এক বছর যাবৎ ক্লাস-পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে আসছিলেন। পরে বিভাগীয় সভাপতি সন্দেহের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত করলে বেরিয়ে আসে ওই শিক্ষার্থী জাবিতে ভর্তি হয়নি।


এ বিষয়ে ত্বাকিয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, ২০১৬ সালে সে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। তবে মেধা তালিকায় স্থান না পেলেও অপেক্ষামান তালিকায় ছিলেন। তাছাড়া তার নানা মুক্তিযোদ্ধা হওয়ায় আল-আমিন হোসেন শাহেদ ৪ লাখ ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে তাকে উপাচার্য কোটায় (মুক্তিযোদ্ধার সন্তান/নাতি-নাতনি ভর্তি হতে পারে) ভর্তি করিয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখায়। পরে ত্বাকিয়া ২০ হাজার টাকা দেয় আল-আমিনকে।


পরে আল-আমিন একটি ফর্ম দেয় ত্বাকিয়াকে। সেটি পূরণ করে ত্বাকিয়া নিজেকে জাবির সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের ৪৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দিয়ে ক্লাস-পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করে আসছিলেন।


এছাড়া ত্বাকিয়া এক লিখিত অভিযোগ পত্রে বলেন, এভাবে ভর্তি করিয়ে দেয়ার পর আমার সঙ্গে আল-আমিনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাই তার সঙ্গে আমার অন্তরঙ্গ মুহূর্তের কিছু ছবি ও ভিডিও থাকায় সে আমাকে ভর্তি জালিয়াতির ব্যাপারে কারো কাছে অভিযোগ না করার জন্য বলে। তাছাড়া সে ওই সব ছবি ও ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়।


রেজিষ্ট্রার অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে উপাচার্য কোটায় সর্বমোট ২০ জন শিক্ষার্থীকে ভর্তি করানো হয়। ওই তালিকার মধ্যে ত্বাকিয়ার নাম পাওয়া যায়নি।


এদিকে আল-আমিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কোনো দোষ করিনি। ওই মেয়ে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। তবে আল-আমিন প্রেমের সম্পর্ক থাকার কথা স্বীকার করলেও অর্থ লেনদেন ও ছবি-ভিডিও ভাইরাল করে দেয়ার হুমকির বিষয়টি অস্বীকার করে।


সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান উজ্জ্বল কুমার মন্ডল বলেন, মেয়েটি আমাদের বিভাগে ক্লাস করেছে। তবে আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি সে আমাদের বিভাগের ছাত্রী না। তার ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি। তার কোনো কাগজপত্র প্রশাসনের কাছে নেই। তাই আমরা প্রক্টরের কাছে তাকে হস্তান্তর করেছি।


প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহা বলেন, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগ থেকে অভিযোগটি এসেছিল। তারপর আমরা অভিযুক্ত ছেলে ও মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে জালিয়াতি প্রক্রিয়ায় ভর্তি চেষ্টার অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে।


বিবার্তা/শরিফুল/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com