দীর্ঘ ১৯ বছর পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হচ্ছে সিনেট রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট নির্বাচন। নির্বাচনকে সামনে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বইছে। নির্বাচনে চারশ'র বেশি ভোটার তাদের পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন। ইতিমধ্যে নির্বাচনের সব প্রস্তুতিও সম্পূর্ণ করা হয়ছে বলে রবিবার জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্তপক্ষ।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ ১৯৭৩ এর ১৮(ধ) ধারা অনুসারে সিনেট হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ কতৃপক্ষ। একই অধ্যাদেশের ১৯.১(র) ধারা অনুসারে ২৫ জন সদস্য রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট অর্থাৎ যারা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করার পর রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন তাদের ভোটে নির্বাচিত হবেন। ১৯.২ ধারায় তিন বছর পর পর নির্বাচন দেয়ার কথা থাকলেও ১৯ বছর ধরে বিভিন্ন জটিলতায় এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। সর্বশেষ ১৯৯৮ সালে রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মেয়াদ শেষ হয় ২০০১ সালের ১ জুন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ও নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক জানান, সিনেটে রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট প্রতিনিধি নির্বাচন আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।
জানা যায়, ৯ নভেম্বর থেকে ১৪ নভেম্বরের মধ্যে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার দিন ছিলো । মোট ১৬০ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিয়েছেন। আর প্রাথমিক ভোটার হিসেবে ৪৩৭৩ জনের নাম প্রকাশ করা হয়েছে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৮ নভেম্বর। নির্বাচন সুষ্ঠ করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং অফিসার।
বর্তমানে এই নির্বাচন নিয়ে ক্যাম্পাস সরগরম। মূলত দুটি প্যানেলে বিভক্ত হয়ে প্রার্থীরা নির্বাচন করছেনঃ প্রশাসনপন্থী (আওয়ামীপন্থী ও সাবেক উপাচার্য শরীফ এনামুলের অনুসারী) ও প্রশাসন বিরোধী। প্রশাসন বিরোধী প্যানেলে আছেন আওয়ামী লীগের একাংশ, বিএনপিপন্থী ও বামপন্থীরা।
আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষকরা বলছেন সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট নির্বাচনে জিতবে।
এদিকে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ও ভোটাররা বলছে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ সমর্থিতদের ভরাডুবি হবে।
রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট নির্বাচনে যারা পাশ করবে তারা শিক্ষার্থীদের সবধরনের চাওয়া পাওয়া ও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রশাসনের সাথে আলোচনা করবেন বলে আশা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
দু’টি ভোট কেন্দ্রে (কলা ও মানবিকী অনুষদ এবং সমাজবিজ্ঞান অনুষদ) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ করা হবে। এদিকে বিএনপি সমর্থিত ভোটারদের একটি অংশ ভোট দেওয়ার সুবিধার্থে ক্যাম্পাসের বাইরেও একটি কেন্দ্র রাখার দাবি তুলেছেন। তাদের দাবি সাবেক অনেক শিক্ষার্থী আছেন যাদের বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে হয়তো ক্যাম্পাসে গিয়ে ভোট দেওয়া সম্ভব হবে না।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম বলেন, উপাচার্য হওয়ার আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম উপাচার্য নির্বাচিত হলে ক্যাম্পাসে রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট নির্বাচন দেব। তারই ধারাবাহিকতায় ক্যাম্পাসে আগামী ৩০ ডিসেম্বর রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট নির্বাচন হবে।
দীর্ঘ দিন পর এই নির্বাচন বর্তমান প্রশাসনের একটি বড় সাফল্য বলে মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বিবার্তা/শরিফুল/শাহনেওয়াজ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]