শিরোনাম
লিপু হত্যার ১১ মাসেও ‘ক্লু’ পায়নি পুলিশ
প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২২:৩৭
লিপু হত্যার ১১ মাসেও ‘ক্লু’ পায়নি পুলিশ
রাবি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মোতালেব হোসেন লিপু হত্যাকাণ্ডের কোনো কুলকিনারা করতে পারছে না পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।


ওই হত্যাকাণ্ডের ১১ মাসেও কোনো ক্লু খুঁজে পায়নি তারা। হত্যাকারীরা হলের বাইরের নাকি ভেতরের তারও জবাব মেলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।


জানা যায়, গত বছরের ২০ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আবদুল লতিফ হলের ভেতরে নির্মমভাবে খুন হয় লিপু। মাথায় জোরালো আঘাত করে তাকে খুন করা হয়। ঘটনার দিন লিপুর চাচা বশির উদ্দিন বাদী হয়ে নগরীরর মতিহার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ এই সময়ে দফায় দফায় তদন্তকারী সংস্থা ও তদন্ত কর্মকর্তা বদল হলেও কার্যত চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার কোনো অগ্রগতি নেই, ফলাফল শূন্য। নৃশংস এই হত্যাকাণ্ড কারণ ও খুনি কারা তা এখনো রহস্যাবৃত্ত। দীর্ঘদিনেও খুনিরা ধরা না পড়ায় হতাশ নিহতের স্বজনরা। মামলাটি দুইজন পুলিশ কর্মকর্তার হাত বদল হয়ে বর্তমানে সিআইডিতে রয়েছে।


মামলা সূত্রে জানা গেছে , হত্যাকাণ্ডের প্রথম ৩ মাসের মধ্যে ৩ বার বদল হয় তদন্ত কর্মকর্তা। মামলাটির বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) সিআইডির ইন্সপেক্টর আসমাউল হক। হত্যাকাণ্ডের ১১ মাস পূর্ণ হলেও মামলারর অভিযোগপত্র তো দূরে, হত্যাকাণ্ডের কোনো ক্লু পাচ্ছে না সিআইডি। তবে মামলাটি সমাধান করতে জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা। এজন্য বিভিন্নজনকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হচ্ছে। লিপুর কয়েকজন সহপাঠীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাদেরকে ওই হলের ঘটনার রাতের সিসি টিভি ক্যামেরার ফুটেজও দেখানো হয়েছে। ওই রাতে কারা হলে প্রবেশ করেছিল ও বের হয়েছিল তার সব ফুটেজ তাদের দেখানো হয়েছে।


হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় লিপুর রুমমেট মনিরুল ইসলাম, বন্ধু প্রদীপ এবং হলের দুজন গার্ড সাইদুল ও মনিরকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে তেমন কোনো তথ্য না পাওয়ায় রুমমেট ছাড়া বাকিদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়। রুমমেট মনিরুল কিছু তথ্য দিয়েছিল সেগুলো যাচাই-বাছাই করে আবার তার রিমান্ড আবেদন করা হয়েছিল। ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে তার শুনানি ছিল ১৫ নভেম্বর। কিন্তু রিমান্ড শুনানির আগেই সে জামিন পায়।


মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্টরা অনুমান করছেন, লিপুকে হলের ভেতরেই রাত ২টার দিকে খুন করা হয়েছে। খুন করার পর লাশ ছাদ থেকে নিচে ফেলে দেয়া হয়। কিন্তু খুনিরা হলের ভেতরের নাকি বাইরে থেকে এসে কেউ লিপুকে খুন করেছে সে বিষয়ে কিছু বলতে পারছেন না তারা। তবে সেই রাতে হলের ভেতরের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে তদন্ত করছেন তারা।


এছাড়াও সিসি টিভির ভিডিও ফুটেজের কিছু ছবি তারা হাতে পেয়েছেন। এসব ছবি নিয়ে তারা তদন্ত করছেন।


এদিকে লিপুর আবাসিকতার ২৫৩ নম্বর কক্ষটিতে এখন আর কেউ থাকছে না। কক্ষটি সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। সেখানে লিপুর ব্যবহৃত সকল জিনিসপত্র রয়েছে। এসব জিনিসপত্র ফেরত চাচ্ছেন লিপুর মা হোসনে আরা বেগম।


তিনি বলেন, বাবা আমার ছেলের হত্যার বিচার দেখে যেতে পারব কিনা জানি না। এতো দিনেও ভালো কোনো খবর তোমরা দিতে পারলে না। আমার ছেলেকে তো ফেরত দিতে পারবেই না। তবে আমার ছেলের ব্যবহৃত জিনিসপত্রগুলো আমাকে ফেরত দাও। আমি ওইসব জিনিসপত্র আমার ছেলের স্মৃতি হিসেবে রেখে দেব।


মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসমাউল হক বলেন, মামলাটি বর্তমানে জটিল আকার ধারণ করেছে। আমরা বিভিন্ন দিক বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত করছি। এখনো বলার মতো মামলার কোনো অগ্রগতি করা সম্ভব হয়নি।


বিবার্তা/নাঈম/কাফী

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com