'বাংলাদেশকে আর কেউ তলাবিহীন বাস্কেট বলতে পারবে না'
প্রকাশ : ০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:৫৩
'বাংলাদেশকে আর কেউ তলাবিহীন বাস্কেট বলতে পারবে না'
বাকৃবি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেছেন, ১৯৭১ সালের সাড়ে সাত কোটি জনসংখ্যা বেড়ে এখন ১৭ কোটিরও বেশি হয়েছে। এই বিপুল জনগোষ্ঠীর পুষ্টি এবং খাদ্য নিরাপত্তার জন্য নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন বাকৃবি'র গ্রাজুয়েটরা। একসময় বাংলাদেশকে বলা হতো তলাবিহীন বাস্কেট। তবে এখন সেই অপবাদ মিউজিয়ামে চলে গেছে। বাংলাদেশকে আর কেউ তলাবিহীন বাস্কেট বলতে পারবে না, যদি না কোনো স্বৈরশাসক বা শোষকগোষ্ঠী বাংলাদেশে ফিরে না আসে।


বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষের (লেভেল-১, সেমিস্টার-১) ভর্তি হওয়া নবীন শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ অনুষ্ঠানে প্রধান পৃষ্ঠপোষকের বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।


উপাচার্য আরও বলেন, প্রতিবছর ৫০ থেকে ৬০ জন মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিজেদের জায়গা করে নিচ্ছে। আমি চাই, আজকে এখানে উপস্থিত সবাই দেশের মানুষের সেবার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পর্যায়েও ভূমিকা রাখুক। খাদ্য উৎপাদন, খাদ্য নিরাপত্তা এবং প্রযুক্তি উন্নয়নের মতো বিজ্ঞানের যুগোপযোগী বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করে নিজেকে গড়ে তুলো। তোমাদের প্রতি আমার একটাই আহ্বান- যুগের চাহিদার সাথে তাল মিলিয়ে নিজেদের গড়ে তোলো, যেন বাংলাদেশ এবং পৃথিবীর সেবা করতে পারো।


শনিবার (৪ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন মিলনায়তনে ওই নবীনবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সোমবার (৬ জানুয়ারি) থেকে তাদের ক্লাস শুরু হবে।


বাকৃবির ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা এবং নবীনবরণ কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হকের সভাপতিত্বে এবং সহযোগী ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ও সাবেক রাষ্ট্রদূত অধ্যাপক ড. আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী। অনুষ্ঠানে প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া।


অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবির ডিন পরিষদের আহবায়ক অধ্যাপক ড. মো. জয়নাল আবেদীন। এছাড়াও বাকৃবির প্রভোস্ট পরিষদের আহবায়ক ড. মো. রুহুল আমিন, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. মো. হেলাল উদ্দীন, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আলীমসহ বিভিন্ন ইনস্টিটিউট ও শাখার পরিচালকবৃন্দ , বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষকবৃন্দ এবং নবীন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ প্রায় ২ হাজার জন উপস্থিত ছিলেন ।


প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী বলেন, 'বর্তমান সময়ে উচ্চশিক্ষা নিয়ে যথেষ্ট সমালোচনা রয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশে উচ্চশিক্ষার মান ক্রমাগতই নিম্নগামী হয়েছে। ইংরেজি ভাষায় দক্ষতার অভাব উচ্চ শিক্ষা ব্যবস্থার সমস্যাকে আরও প্রকট করে তুলেছে। কারণ বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উচ্চশিক্ষার প্রাথমিক জ্ঞানভাণ্ডার ইংরেজি ভাষায় সংরক্ষিত। শিক্ষার্থীদের ইংরেজি ভাষার দক্ষতার অভাবে এ সব জ্ঞান সম্পূর্ণভাবে আত্মস্থ করা সম্ভব হয় না।


বাংলা ভাষায় উচ্চশিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় গ্রন্থ রচনা কিংবা ইংরেজি থেকে বাংলা ভাষায় বই অনুবাদে আমাদের প্রচেষ্টা সীমিত ছিল। ফলে, জ্ঞান অর্জন এবং সঞ্চালন বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এর পাশাপাশি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাস, অরাজকতা ও সুশিক্ষার পরিবেশের অভাব শিক্ষার মানকে আরও অবনমনমুখী করেছে।


আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে উচ্চশিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই উচ্চশিক্ষার মান যথাযথ নিরুপন করে শিক্ষার্থীদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে। নবাগত ছাত্রছাত্রীদের বলতে চাই, তোমাদের সামনে রয়েছে এক অপার সম্ভাবনা। চলমান সময়ে তোমাদের দায়িত্ব অনেক বেড়ে গেছে। দেশ গড়ার কাজে তোমাদের আত্মনিয়োগ করতে হবে। নির্যাতন-নিপীড়ন ও শোষণ-বঞ্চনাহীন এক বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে তোমাদের এগিয়ে আসতে হবে।


বিবার্তা/আমান/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com