ফুল দিতে এসে বাঁধার মুখে ইবি শিক্ষক
প্রকাশ : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০:৩৮
ফুল দিতে এসে বাঁধার মুখে ইবি শিক্ষক
ইবি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে শহীদ বেদিতে ফুল দিতে গিয়ে বাঁধার সম্মুখীন হয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম। তিনি শহীদ বেদিতে আসলে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের বাঁধা ও হুমকি প্রদানের অভিযোগ’ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় তাকে বেদি থেকে নেমে যেতে বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা।


১৬ ডিসেম্বর, সোমবার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘মুক্ত বাংলা’য় এ ঘটনা ঘটে।


বৈষম্য বিরোধীদের অভিযোগ, শহিদুল ইসলাম জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। এছাড়া আন্দোলনকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে হুমকি দিতেন তিনি। এছাড়া শিক্ষার্থীদের দ্বারা জোরপূর্বক আন্দোলন প্রত্যাহারের চেষ্টাও করেছিলেন শহিদুল।


জানা যায়, সোমাবার বেলা সাড়ে দশটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক ‘মুক্ত বাংলা’য় শ্রদ্ধা নিবেনের পর বিভিন্ন বিভাগ ও সংগঠন শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে। এসময় হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পক্ষ থেকে ফুল দিতে আসে শহিদুল ইসলাম ও বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এসময় শহিদুল ইসলামের উপস্থিতি দেখে তাকে গণঅভ্যুত্থানে বিরোধিতাকারী উল্লেখ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা। পরে সেখান থেকে শহিদুল চলে গেলে বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাকে ছাড়াই শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন।


এ বিষয় সহকারী অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম বলেন, শহীদ বেদিতে উঠতে গেলে সমন্বয়ক সুইট আমাকে ফুল দিতে নিষেধ করেন। তখন আমি কারণ জানতে চাইলে সুইট আমাকে বলেন, ‘আপনি জুলাই আগস্ট গণঅভ্যুত্থান আন্দোলনের বিরোধী। আপনার হাতে শহীদ শিক্ষার্থীদের দাগ লেগে আছে। তাই আমরা আপনাকে ফুল দিতে দিবো না। এসময় আমি কিছু না বলে চলে আসি। আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করি। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আন্দোলনের পক্ষে বিপক্ষে কোনোটাতেই ছিলাম না।’


এ বিষয়ে এস এম সুইট বলেন, যারা গণহত্যাকারীদের দোসর, যাদের হাতে শহীদের রক্তের দাগ লেগে আছে। আমরা যদি তাদের শহীদ বেদিতে ফুল দিতে সুযোগ করে দেই, তাহলে জুলাই গনঅভ্যুত্থানের শহীদ ও ৭১ এর মহান স্বাধীনতা আন্দোলনের শহীদের রক্তের সাথে বেঈমানি করা হবে। এই সকল দোসররা জুলাই আন্দোলন চলাকালে আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের নানাভাবে শিক্ষার্থীদের হুমকি দামকির উপর রাখতো। এছাড়াও তিনি একজন ছাত্রলীগ নেতা ছিলেন ও জুলাই আন্দোলন চলাকালে ছাত্রলীগকে তিনি লেলিয়ে দিয়েছিলেন এবং তাদেরকে আর্থিক ভাবে সহযোগিতাও করতেন।


উল্লেখ্য, সহকারী অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন। রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগের শর্ত কমিয়ে তাকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষার ভাইভায় এক ছাত্রী হিজাব না খোলায় ভাইভা নেননি শিক্ষকরা। সেই বোর্ডে বিভাগীয় সভাপতি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন শহিদুল। পরে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে দুই দফায় ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করা হয় ও প্রশাসনকে স্মারকলিপি দেয়া হয়। পরে ভিসি বিষয়টি নিয়ে বিভাগের শিক্ষকদের ডেকে ভাইভা নিতে বললে তার ভাইভা নেয়া হয়। পরবর্তীতে ওই ছাত্রী লেখাপড়া বাদ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।


বিবার্তা/জায়িম/এনএইচ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com