
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, কথা না শুনলে নম্বর কমিয়ে দেওয়া ও ছাত্রদের সমকামিতায় উদ্বুদ্ধ করাসহ নানা অভিযোগের কারণে তার চাকরিচ্যুতির দাবিতে বিক্ষোভ ও প্রধান ফটক অবরোধ করেছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
৭ অক্টোবর, সোমবার দুপুরে তারা ফটক অবরোধ করে। পরে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহর কাছে লিখিত অভিযোগ করেন তারা।
সহকারী অধ্যাপক হাফিজের চাকরিচ্যুতির দাবিতে দুপুর ২টায় প্রধান ফটক অবরোধ করে দুপুরের সিডিউলের বাস আটকে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। দুপুর আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা এসে উপাচার্যের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের আলোচনার আশ্বাস দিলে তারা প্রধান ফটক ছেড়ে দেন। দুপুর ৩টায় উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠকে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ২৭ টি অভিযোগ এনে তার বহিষ্কারের দাবিতে লিখিত দেন। এসময় উপাচার্য তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে আন্দোলন স্থগিত করেন তারা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সহকারী অধ্যাপক হাফিজ ছাত্রীদের বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত ও শ্রেণিকক্ষে সবার সামনে ছাত্রীদের ‘নষ্টা’সহ কুরুচিপূর্ণ ভাষায় গালিগালাজ করতেন তিনি। এছাড়া তার সাথে ভালো সম্পর্ক না থাকলে পরীক্ষার খাতায় ও ইন্টার্নাল নাম্বার কমিয়ে দিতেন। একইসাথে কেউ দাড়ি রাখলে শিবির ট্যাগ দেয়া ও মেয়েরা পর্দা করলে তাদের ব্যঙ্গ করতেন তিনি। তাছাড়া ছাত্রদেরকে সমকামিতার দিকে বিভিন্নভাবে উদ্বুদ্ধ করতেন তিনি।
তিনি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেয়ায় একাধিক শিক্ষার্থীকে হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে ছাত্রলীগের প্রোগ্রামে শিক্ষার্থীদের জোর করে পাঠানোর অভিযোগও করেন তারা।
আন্দোলনকালে বিভাগের ছাত্রী মৌমিতা তাসনিয়া বলেন, তিনি মেয়েদেরকে বাজারের মেয়ে ও নর্তকী বলে গালি দিত। ফেসবুকে আমাদের ছবি দেখে বলতো, সব তো কাস্টমার ধরার ধান্দা। এছাড়া ক্লাসে বিভিন্ন অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করে কথা বলতেন তিনি।
আঁখি আলমগীর নামের আরেক ছাত্রী বলেন, তিনি ফেইক আইডি দিয়ে আমার সঙ্গে বিভিন্ন সময় চ্যাটিং করতেন। শ্রেণিকক্ষে আমার পোশাক নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন। এছাড়া আমি পর্দা করতে শুরু করলে তিনি আমাকে ‘হুজুর সেজেছে’ বলে কটূক্তি করতেন। পরে আমাকে জীবননাশের হুমকিও দেন এই শিক্ষক।
বিভাগের শিক্ষার্থী মিরাজ হাসান বলেন, হাফিজ স্যার আমাকে পরিকল্পিতভাবে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ ও নেশা দ্রব্যের সঙ্গে জড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। পরে আমি রাজি নাহলে তিনি আমার উপর মারাত্মক ক্ষিপ্ত হয়ে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি।
বিভাগের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক আতিফা কাফি বলেন, উপাচার্য স্যার তদন্ত কমিটির আশ্বাস দিয়েছেন। তদন্ত কমিটি পরবর্তী পদক্ষেপ নিবে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি করা হবে। তারা সকল অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে দেখবেন। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী পরবর্তীতে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।
বিবার্তা/তাজমুল/জেএইচ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]