শিরোনাম
খুবিতে গণযোগাযোগ বিভাগের বর্ষপূর্তি ও শিক্ষাসফর
প্রকাশ : ২৬ মার্চ ২০১৭, ০৯:২৪
খুবিতে গণযোগাযোগ বিভাগের বর্ষপূর্তি ও শিক্ষাসফর
মামুন অর রশিদ, খুবি
প্রিন্ট অ-অ+

চলছে স্বাধীনতার মাস। স্বাধীনতার আলোক উজ্জ্বল এক দিনে আয়োজন করা হয় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের প্রীতি শিক্ষাসফর। মার্চ এর ২৪ তারিখ। গন্তব্য দেশের প্রথম স্বাধীন জেলা যশোরের মনোহরপুর বোটক্লাব।


ঘড়ির কাঁটা ঠিক সকাল ৮.০০ টা। স্নিগ্ধ সকাল। বসন্তে গাছে গাছে নতুন সবুজ কচি পাতা। আশেপাশে মুঠোফোন ও ক্যামেরার শাটারের ক্লিক ক্লিক শব্দ। মনোমুগ্ধকর বাহারি পোশাক আর শিক্ষার্থীদের গুঞ্জনে মুখরিত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। ব্যানার, ফেস্টুন, বেলুনে সজ্জিত বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি গাড়ি। প্রস্তুতি শেষ। সকাল ৮.১৫ মিনিট গাড়ির চাকা ঘুরতে শুরু করল।


ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক পেরিয়ে গাড়ি দুটি জিরো পয়েন্টের বাইপাস রোড ধরে যশোর অভিমুখে যাত্রা শুরু করেছে। পথের মাঝে গাড়ির মধ্যে সকালের নাস্তা সেরে ফেলা হলো। শিক্ষার্থীদের হইচই, গানের তালে নাচ, সেলফি তোলা, সাথে শিক্ষকদেরও অংশগ্রহণ যাত্রাকে আরো প্রাণবন্ত করে তুলছিল।


বেলা ১১.০৫টা পৌঁছে গেলাম কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যস্থল মনোহরপুর বোট ক্লাব। নিবিড় পরিবেশ, মিনি চিড়িয়াখানা, দোলনা, বিশাল লেক, ঝুলন্ত সেতু, সারি সারি অর্জুন গাছের সারি। আর ছোট ছোট মনোরম কটেজ । সাজানো গোছানো মনোরম পরিবেশ পেয়ে শিক্ষার্থীদের আনন্দের যেন সীমা নেই। ক্লাবে প্রবেশ করেই ঘোরাঘুরি, কোথায় কী আছে দেখা, ছবি তোলা আর হৈ হুল্লোড়! শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজন করা ছিল বল ঝুড়িতে ফেলা, ছবিতে টিপ পরানো, হাড়ি ভাঙা, ম্যাজিক বক্স ইত্যাদি খেলার।


দুপুর ২.০০ টায় খাওয়া। এরপর একটু বিশ্রাম। বিকাল ঠিক ৩টায় সবচেয়ে আকর্ষণীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কৌতুক, গান, কবিতা আবৃত্তি, যুগল নাচে বোট ক্লাব মাতিয়ে তোলে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীরা। প্রাণবন্ত উপস্থাপনা অনুষ্ঠানকে করে তোলে আরো প্রাণদায়ক। বাড়তি পাওনা ছিল শিক্ষকদের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ। সবশেষে ছিল মজাদার র‌্যাফেল ড্র’য়ের অনুষ্ঠান।



সন্ধ্যা ৬.০০ বেজে গেল। এখন ফেরার পালা। শিক্ষার্থীরা গাড়িতে বসতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে এবার রওনা হলাম। ফিরতি যাত্রায় ছিল শিক্ষার্থীদের আড্ডা আর গানের কলি প্রতিযোগিতা। সারাদিনের কর্মকাণ্ডের পরও এতটুকু ক্লান্তির ছাপ নেই কারও চোখেমুখে। রাত ৮ টা বেজে ৪০ মিনিট গাড়ি দুটি ক্যাম্পাসে প্রবেশ করল। কিন্তু শিক্ষার্থীদের হইচই যেন শেষই আর হয় না ।


‘আমরা নির্ভীক, আমরা দুর্বার, আমরা এমসিজে পরিবার’ গানে উল্লসিত গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিন। এবার সবার বাড়ি ফেরার পালা। সময় ফুরিয়ে যায়, কিন্তু রেখে যায় কিছু সুখস্মৃতি। যার রেশ থাকে আজীবন। অনুপ্রেরণা দেয় ভালো কিছু করার।


দেশের তৃতীয় বৃহত্তম বিভাগীয় শহর খুলনাতে যোগাযোগ ও সাংবাদিকতার প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান বিস্তরণের জন্য খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে সামজিক বিজ্ঞান স্কুলের অধীনে ছাব্বিশতম ডিসিপ্লিন হিসেবে ২০১৬ সালের ৩ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিন। একটি ব্যাচ, দু’জন শিক্ষক ও একজন বিভাগীয় প্রধান(ভারপ্রাপ্ত) দিয়ে কার্যক্রম চালু করে ডিসিপ্লিনটি।


২০১৭ সালে দ্বিতীয় বর্ষে পদার্পণ করেছে বেড়েছে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা, বেড়েছে শিক্ষকদের সংখ্যা। অবাধ তথ্যপ্রবাহের যুগে তথ্যকে মানুষের দোরগড়ায় পৌঁছে দিতে গণমাধ্যম নানা আঙ্গিকে নানান গাঠনিক রূপে কাজ করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় খুলনায় যাত্রা শুরু করে এই ডিসিপ্লিনটি।


শুরু থেকেই ডিসিপ্লিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা সহশিক্ষাকার্যক্রমে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে চলেছে। ক্রিকেট, ভলিবল, হ্যান্ডবল, আবৃত্তি, বির্তক, নাচ, গানসহ নানা কার্যক্রমে শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করছে। প্রথম বছরেই বাংলাদশে নারী প্রগতি সংঘের সাথে যৌথভাবে একটি সেমিনারের আয়োজন করে ডিসিপ্লিনটি।


খুলনা শহরের প্রবেশমুখ জিরোপয়েন্ট এর দু’শ গজ উত্তরে গল্লামারী নামক স্থানের ময়ূর নদীর কূলঘেঁষে অবস্থিত দেশের অন্যতম এ বিদ্যাপীঠটি। ১৯৯১ সালের ২৫ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করলেও মূলত ১৯৮৭ সালের ৪ জানুয়ারি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম হয়। বর্তমানে ছয়টি স্কুলের অধীনে ২৮টি ডিসিপ্লিন ও দুটি আলাদা ইনিস্টিটিউট এবং একটি স্কুল নিয়ে এর কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।


বিবার্তা/মামুন/জিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com