শিরোনাম
‘ক্ষমতায় যেতে হলে উন্নয়নের কথা ভাবতে হবে’
প্রকাশ : ২২ মার্চ ২০১৭, ১৬:৫৭
‘ক্ষমতায় যেতে হলে উন্নয়নের কথা ভাবতে হবে’
ঢাবি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

বাংলাদেশ বাংকের সাবেক গভর্নর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশ বর্তমানে এমন এক অবস্থায় চলে গেছে যে, এরপর যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন দেশকে পিছিয়ে দেয়ার সাহস আর কেউ দেখাতে পারবে না। আগামী নির্বাচনে ক্ষমতায় যেতে হলে উন্নয়নের কথা ভাবতে হবে। গরিব মানুষের কথা চিন্তা করতে হবে। তা না হলে কেউ ক্ষমতায় থাকতে পারবে না।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস বিভাগের উদ্যোগে বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচার থিয়েটার ভবনস্থ সিরাজুল ইসলাম লেকচার হল মিলনায়তনে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মারক বক্তৃতা তিনি এ কথা বলেন।


‘মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন: মুক্তিযুদ্ধের মানুষ’ শীর্ষক সেমিনারে ৫০তম বক্তা হিসেবে বাংলাদেশ বাংকের সাবেক এই গভর্ণর বলেন, ‘সাধারণ মানুষ যে স্বপ্ন নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল সেই স্বপ্নের বড় অংশই স্থান পেয়েছিল বাহাত্তরের সংবিধানে। একইসাথে প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায়ও আর্থ-সামাজিক মুক্তির আকাঙ্কা সন্নিবেশিত হয়েছিল। তখন “অন্ধকার থেকে আলোর পথে” যে যাত্রা বাঙালি শুরু করেছিল তার মূল লক্ষ্যই ছিল দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ তার স্বপ্নগুচ্ছ থেকে ছিটকে পড়ে যায়।’


ড. আতিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশের চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার সাত শতাংশের মাইলফলক স্পর্শ করেছে। একই সাথে মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৪৬৬ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। দারিদ্রের হার নেমে এসেছে শতকরা ২৪ ভাগে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বলতে দ্বিধা নেই, উন্নয়নের মহাসড়কে আজ বাংলাদেশ। এরপরও আমাদের আত্মতুষ্টির অবকাশ নেই’,।


প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে সাধারণ মানুষের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। দেশের সাধারণ মানুষ তাদের নানাভাবে এ দেশের মুক্তিযুদ্ধে সাহায্য করেছে। মায়েরা মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দিয়েছেন। তাদের লুকিয়ে রেখে রক্ষা করেছেন। সব মুক্তিযোদ্ধার তালিকা নেই।’


সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবু মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করা সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তার সংখ্যা ছিল মাত্র ১৮ হাজার ৬০০জন। বাকি সবাই বিভিন্ন পেশার সাধারণ মানুষ। যারা জীবন দিয়ে দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন। আর মুক্তিযুদ্ধে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ের শিক্ষক শহীদ হয়েছেন এক হাজারের মত। আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ জন শিক্ষক যুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন। যার মধ্যে কলা অনুষদের ছিলেন নয় জন। সর্বোপরি সাধারণ মানুষ আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সবচেয় বৃহৎ শক্তি ছিল। যাদের অবদানে আমরা এই দেশ পেয়েছি।


ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. নূরুল হুদা আবুল মনসুরের সভাপতিত্বে সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন অধ্যাপক উপস্থিত ছিলেন। সেমিনারের শুরুতে অতিথিদের ফুলেল শুভেচ্ছো জানানোর পর মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করে উপস্থিত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।


উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ ১৯৮২ সাল থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পাবলিক সেমিনারের আয়োজন করে আসছে। পাবলিক সেমিনারে বক্তাদের দেয়া নির্বাচিত বক্তব্য নিয়ে বক্তৃতা সংস্করণও প্রকাশ করেছে ঢাবির প্রতিষ্ঠাকালীন এই বিভাগটি। আগামীতে বক্তৃতা সংস্করণের দ্বিতীয় অংশ প্রকাশ করা হবে বলে বলে বিভাগীয় সূত্রে জানা গেছে।


বিবার্তা/লাভলু/পলাশ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com