
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডে অসদাচরণের অভিযোগে এক শিক্ষককে পদাবনতি প্রদান করেছে কর্তৃপক্ষ।
১৮ ফেব্রুয়ারি, রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান স্বাক্ষরিত অফিস আদেশ থেকে বিষয়টি জানা যায়।
এতে বিভাগের সাবেক সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক ড. বখতিয়ার হাসানকে প্রভাষক পদে পদাবনতি দেয়া হয়।
এদিকে এ শাস্তিকে ‘স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় একচ্ছিত্র আধিপত্য বিস্তারের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা’ বলে দাবি করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু পরিষদ শিক্ষক ইউনিট।
জানা যায়, ২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের প্রভাষক পদে নিয়োগ বোর্ড অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালামের সভাপতিত্বে বিশেষজ্ঞ সদস্য ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুজ্জামান।
এছাড়া সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান ও বিভাগের তৎকালীন সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক ড. বখতিয়ার হাসান সদস্য হিসেবে ছিলেন।
বোর্ডে প্রার্থী চূড়ান্তকরণ নিয়ে মাতানৈক্যের জেরে স্বাক্ষর না করেই বোর্ড থেকে বের হয়ে যান বিভাগের তৎকালীন সভাপতি ড. বখতিয়ার হাসান। এ ঘটনায় ড. বখতিয়ারের বিরুদ্ধে বোর্ডের অন্যান্য সদস্যের সাথে অশোভন আচরণের লিখিত অভিযোগ করেন বোর্ডের এক সদস্য। পরে এ বিষয়ে তদন্তের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
রেজিস্টার স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে বলা হয়, উক্ত তদন্ত কমিটি অভিযোগের সত্যতা পেয়ে সে মর্মে রিপোর্ট প্রদান করে। কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি বিধি অনুযায়ী প্রভাষক পদে পদাবনতি প্রদান করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬২ তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এদিকে এ সিদ্ধান্তের পর এর নিন্দা জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু পরিষদ শিক্ষক ইউনিট। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ ধরনের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সকল বিভাগের সভাপতির কণ্ঠরোধ করে স্বৈরতান্ত্রিক শাসন কায়েমের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারের সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা করছেন। আমরা অনতিবিলম্বে এ ধরনের বিধি বহির্ভূত সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জোরালো দাবি জানাচ্ছি অন্যথায় যেকোনো পরিস্থিতির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দায়ী থাকবে।
এছাড়া একই দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘নওগাঁ জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতি’। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।
এ বিষয়ে ড. বখতিয়ার হাসান বলেন, ‘নিয়োগ বোর্ডে আমার কোন মতামত না নিয়ে নিজেদের মত কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছিলো। তাই আমি বোর্ড থেকে বের হয়ে আসি। এরপর আমাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছিল। এ বিষয়ে আমার করা রিটটি বিচারাধীন রয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নানা দুর্নীতি তদন্তাধীন রয়েছে। কিন্তু অনিমতান্ত্রিক ভাবে আমার বিরুদ্ধে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, ‘তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট তাকে এ শাস্তি দিয়েছে। এ বিষয়ে আমার বলার কিছু নেই।’
বিবার্তা/জায়িম/সউদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]