৫ দফা দাবির সুষ্ঠু বাস্তবায়ন না হলে ভর্তি পরীক্ষা বন্ধের আল্টিমেটাম
প্রকাশ : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৮:৩৩
৫ দফা দাবির সুষ্ঠু বাস্তবায়ন না হলে ভর্তি পরীক্ষা বন্ধের আল্টিমেটাম
জাবি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) সংঘটিত ধর্ষণ কাণ্ডে চলমান আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চ। আসন্ন ২০ ফেব্রুয়ারির সিন্ডিকেট সভায় দাবিগুলোর সুষ্ঠু বাস্তবায়ন না হলে ২২ ফেব্রুয়ারিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা বন্ধের আল্টিমেটাম দেন এই মঞ্চের আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।


১৭ ফেব্রুয়ারি, শনিবার বিকাল সাড়ে তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনের শিক্ষক লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।


লিখিত বিবৃতিতে তারা জানান, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে, আসন্ন ২২ তারিখে অনুষ্ঠিতব্য ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের পূর্বেই আমাদের দাবি বাস্তবায়নের স্বার্থে সিন্ডিকেট আয়োজন সংক্রান্ত অফিস কার্যক্রম পরিচালনা প্রয়োজনীয় বিধায় নিপীড়নবিরোধী মঞ্চ অবিলম্বে সিন্ডিকেট সভার সুষ্ঠু আয়োজনের লক্ষ্যে রেজিস্ট্রার ভবনে চলমান প্রতীকী অবরোধ কর্মসূচি আপাতত স্থগিত করছে।


বিবৃতিতে আরও বলা হয়, মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করা সহ মাদক সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দেওয়ার দাবি বাস্তবায়নে প্রশাসন কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপসমূহকে অপর্যাপ্ত, অদক্ষ ও অগ্রহণযোগ্য।


যৌন নিপীড়ক মাহমুদুর রহমান জনির বিচার ও ধর্ষণ কাণ্ডে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর এবং মীর মোশাররফ হোসেন হলের প্রোভোস্টের সম্পৃক্ততা তদন্তের দাবিতেও প্রশাসনের আশ্বাসকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। প্রশাসনের এই রহস্যজনক নির্লিপ্ততা ও অবহেলার প্রেক্ষিতে নিপীড়নবিরোধী মঞ্চ চলমান ঘটনাবলীর উপরে সার্বক্ষণিক নজর রাখছে এবং কঠোরতর আন্দোলন গড়ে তোলার পূর্ণ প্রস্তুতি গ্রহণ করছে।


বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, ২০ তারিখের সিন্ডিকেট মিটিংয়ে যদি আশানুরূপ কোন সিদ্ধান্ত না আসে তাহলে আমরা আমাদের আন্দোলন জারি রাখবো এবং আন্দোলনের ফলে যদি ভর্তি পরীক্ষা ব্যাহত হয় তাহলে এর দায় প্রশাসনকে নিতে হবে। সিন্ডিকেটের অন্যতম সিদ্ধান্ত ছিল পাঁচ কর্ম দিবসের মধ্যে অছাত্রদের বের করার কথা ছিল এবং তাদের তালিকা প্রকাশের কথা ছিল কিন্তু তারা আমাদেরকে তালিকা দিতে পারে নি। এখানে প্রশাসনের গড়িমসি ও শৈথল্য প্রকাশ পেয়েছে।


তিনি আরও বলেন, আমরা এর আগেও বলেছি ধর্ষণকাণ্ডে সহায়তাকারীদের পলায়নের দায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর এড়াতে পারে না। যেখানে RAB এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন প্রশাসনকে দায়ী করেছেন সেখানে এই বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে বোঝা উচিত। এই ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের জন্য প্রক্টর এবং প্রভোস্টকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়ার কোন সদিচ্ছা আমরা দেখতে পাইনি।


বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার বলেন, আমরা সুস্পষ্ট বার্তার মাধ্যমে জানিয়ে দিতে চাই, বিশ্ববিদ্যালয় চলমান পরিস্থিতির সুষ্ঠু বিচার না হয়ে দায়সারা ভাবে চলতে থাকলে আমরা আসন্ন ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে দিতে পারি না। কারণ আমাদের যে পাঁচ দফা দাবি ছিল তার কোনোটারই দৃশ্যমান ফলাফল আমরা দেখতে পাইনি। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট বলা হয়েছে পাঁচ কর্ম দিবসের মধ্যে অছাত্রদের বের করতে হবে, সেটি তারা বাস্তবায়ন করতে পারেনি।


বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক জামাল উদ্দিন বলেন, লং টার্ম সিস্টেম পরিস্থিতি সম্পর্কে জানান সকল অনাচারের বিরুদ্ধে আমাদের এ আন্দোলন। কিন্তু বিচার তো আর আমাদের হাতে নেই প্রশাসন সেটি করবে বলে আমাদের বিশ্বাস। বিচার যদি সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতা না পায় তাহলে আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে।


আন্তর্জাতিক বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফ সোহেল বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি ধর্ষণে যারা সহযোগিতা করেছেন তারা নির্বিঘ্নে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এমতাবস্থায় যদি ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন হয় তাহলে যারা ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসবে তাদের নিরাপত্তা কোথায়? শিক্ষার্থীরা নিরাপদ নয়। আমাদের আন্দোলনের উদ্দেশ্য তাদের ভোগান্তি নয়, পরীক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থেই আমরা আন্দোলন জারি রাখছি। আর বর্তমানে যে পরিস্থিতি তার দায় প্রশাসন কোন ভাবে এড়াতে পারে না।


সংবাদ সম্মেলনে আগামীকাল বেলা একটায় বিক্ষোভ সমাবেশ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশে ভাস্কর্যে সামনে নিপীড়কের কুশপুত্তলিকা দাহ করার ঘোষণা করেন।


বিবার্তা/আয়েশা/সউদ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com