
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজ বিভাগের ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক এবং থিসিস সুপারভাইজার অধ্যাপক ড. মাহবুবুল মতিনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার বিচার দাবিতে মানববন্ধন করে ক্লাস বর্জন ও ঐ শিক্ষকের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি তুলেছেন শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনারে আয়োজিত মানববন্ধনে এ ঘোষণা দেন তারা। এর আগে একই দাবিতে সকাল দশটা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত বিভাগের সভাপতির কক্ষের সামনেও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন এই শিক্ষার্থীরা।
১৭-১৮ সেশনের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা আমাদের সহপাঠীর সাথে ঘটে যাওয়া এ ঘটনার দ্রুত বিচার চাই ও শিক্ষকের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে মানববন্ধনে নেমেছি। আমরা চাই যতদ্রুত সম্ভব বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
চতুর্থ বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, স্যারকে বিভাগকে থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হোক। আমরা কিছুদিন পর ওই সেশনে যাব, এখন যদি আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারি তাহলে আমরা কোথায় পড়ালেখা করতে আসছি? আমরা শেষ পর্যন্ত এই শিক্ষকের বহিষ্কার দেখতে চাই।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড.দেবাশিষ পালিতের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা আজ বেলা সাড়ে ১১টায় একাডেমিক কমিটির সকল শিক্ষক মিলে এই বিষয়টা নিয়ে আলোচনায় বসেছি। কিন্তু আমাদের একটা সীমাবদ্ধতা আছে কারণ আমাদের সব কিছুর অভিভাবক হচ্ছেন উপাচার্য মহোদয়। তিনিই বড় সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে থাকেন। তবে আমরা আজ সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যতদিন পর্যন্ত তদন্তের কাজ শেষ না হয় ততদিন পর্যন্তর অভিযুক্ত শিক্ষককে সকল একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’
অভিযোগ সত্যতার ব্যাপারে জানতে চাইলে দেবাশিষ পালিত বলেন, এটা আমরা শুনেছি তবে তদন্ত করা ছাড়া সত্যতার ব্যাপারটা বলা যাচ্ছে না। আজ এটা নিয়ে উপাচার্যের সাথে মিটিং হবে তখন বোঝা যাবে। তবে আমরা অভিযোগটা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি।
তবে, অভিযুক্ত অধ্যাপক অভিযোগটি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন,অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।
জানা যায়, গত বুধবার (৩১জানুয়ারি) উপাচার্যের কাছে যৌন হয়রানি ও ধর্ষণ-চেষ্টার লিখিত অভিযোগপত্র দেন এক ছাত্রী।
ভিসি বরাবর অভিযোগপত্রে ওই ছাত্রী উল্লেখ করেন, মাস্টার্সের থিসিস শুরু হওয়ার পর থেকে সুপারভাইজারের দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ভুক্তভোগীকে অসংগত ও অনুপযুক্ত কথাবার্তা বলতেন, হাতসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে অতর্কিত ও জোরপূর্বক স্পর্শ করতেন।
গত ৬ জানুয়ারি ল্যাবে গায়ে খুব ঠান্ডা লাগছে বলে উক্ত শিক্ষক তাকে জোরপূর্বক জাপটে ধরেন এবং ভুক্তভোগী ছাড়াবার চেষ্টা করেন। তৎক্ষণাৎ আরেক ল্যাবমেট এসে পড়লে তিনি কোনোমতে সরে পড়েন। বাকি মেয়েরা মিলে সিদ্ধান্ত নেয় স্যারের ল্যাবে কেউ একা যাবে না এখন থেকে।
পরে ১৩ জানুয়ারি বেলা ১২টার দিকে ভুক্তভোগীকে কেমিক্যাল দেয়ার নামে রুমে ডেকে নিয়ে অভিযুক্ত তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। অভিযোগপত্রে আরও দু’জন শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখ করা হয় এবং বলা হয় তারাসহ আরও বহু শিক্ষার্থী অভিযুক্ত দ্বারা যৌন হয়রানি ও নিপীড়নের শিকার হয়েছে।
বিবার্তা/মহসিন/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]