শিরোনাম
কুবি অধ্যাপকের রিট, ডিন পদে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ
প্রকাশ : ১০ মার্চ ২০২০, ২২:৪৪
কুবি অধ্যাপকের রিট, ডিন পদে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ
কুবি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) বিজ্ঞান অনুষদের ডিন পদে ছয় মাসের স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট অধিনস্থ হাইকোর্ট বিভাগ। উক্ত অনুষদের ডিন নিয়োগে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন লঙ্ঘন করার অভিযোগ করে এক অধ্যাপকের রিটের প্রেক্ষিতে এই স্থগিতাদেশ দেন হাইকোর্টের দুই বিচারপতির সমন্বিত বেঞ্চ।


বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে অধ্যাপকদের মধ্য থেকে ডিন নিয়োগের কথা উল্লেখ থাকলেও তা উপেক্ষা করার অভিযোগ তুলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে রিটটি দায়ের করেছেন সাবেক সিন্ডিকেট সদস্য এবং রসায়ন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. সৈয়দুর রহমান। রিটের প্রেক্ষিতে বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিম এবং মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অফিসের কার্যক্রম এবং এই ডিন নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর ছয় মাসের স্থগিতাদেশ দেন।


বিভিন্ন অফিস আদেশ ও স্মারকসূত্রে জানা যায়, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি উপাচার্যের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সাক্ষরিত এক অফিস আদেশের মাধ্যমে বিজ্ঞান অনুষদের ডিন নিযুক্ত হন পরিসংখ্যান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. দুলাল চন্দ্র নন্দী। অফিস আদেশে 'কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইন- ২০০৬ এর ধারা ২২ (৫)' অনুযায়ী এই নিয়োগের কথা উল্লেখ আছে।


তবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় উল্লেখ আছে, 'ভাইস চ্যান্সেলর, সিন্ডিকেটের অনুমোদনক্রমে, প্রত্যেক অনুষদের জন্য উহার বিভিন্ন বিভাগের অধ্যাপকদের মধ্য হইতে, জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে, পালাক্রমে দুই বৎসর মেয়াদের জন্য ডিন নিযুক্ত করিবেন।'


অধ্যাপক ড. সৈয়দুর রহমান অভিযোগ করেন, 'আইন অনুযায়ী কোনো অনুষদে অধ্যাপক থাকলে সেখানে অধ্যাপকদের মধ্য থেকেই পালাক্রমে ডিন নিযুক্ত হবেন। তাদের উপেক্ষা করে সহযোগী অধ্যাপকদের মধ্য থেকে ডিন নিয়োগ করা স্পষ্টত আইনের ব্যত্যয়। যা গত টার্মের ডিন নিয়োগেই বিজ্ঞান অনুষদে ঘটেছে, এবার তার পুনারাবৃত্তি হলো।'


অধ্যাপক সৈয়দ আরো জানান, 'বিজ্ঞান অনুষদে গতবারের ডিন নিয়োগের সময়ই জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে আমার ডিন হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু সিন্ডিকেটের অনুমোদন ছাড়াই রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. রায়হান উদ্দিনকে ডিন নিযুক্ত করেন (২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮) সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত উপাচার্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃহত্তর স্বার্থে আমি তখন এটা নিয়ে প্রকাশ্যে বিরোধিতা করিনি। কিন্তু এবারও আমার প্রতি ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে ডিন পদে নিয়োগ না দিয়ে আইনের ব্যত্যয় করা হয়েছে। এর আগেও আমার অধ্যাপকের জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণসহ বেশকিছু ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিমাতাসুলভ আচরণ করেছে।'


এদিকে রিটকারীর আইনজীবী মো. মুহিব উল্লাহ মারুফ বলেন, 'আইন অনুযায়ী সৈয়দুর রহমানের ডিন হওয়ার কথা। কিন্তু তিনি জ্যেষ্ঠ হয়েও ডিন পদ পাননি। তার রিটের প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালত ওই অনুষদের ডিন অফিস ও ডিন নিয়োগের এই প্রক্রিয়ার উপর ছয় মাসের স্থগিতাদেশ দিয়েছেন।'


এদিকে বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে আইন মেনেই করা হয়েছে ডিন নিয়োগ প্রক্রিয়া। অধ্যাপক সৈয়দ বিশ্ববিদ্যালয় আইনের আংশিক আমলে নিচ্ছেন।


এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো: আবু তাহের জানান, 'আমি মৌখিকভাবে রিট ও নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারটি জেনেছি। চিঠি এখনো হাতে পাইনি। পেলে এ ব্যাপারে প্রশাসনিকভাবে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হবে।'


ডিন নিয়োগের ব্যাপারে তিনি বলেন, 'আইনের ব্যত্যয় করে কাউকে নিয়োগ দেয়া হয়নি। আইনে অধ্যাপকের জ্যেষ্ঠতার পাশাপশি বিভিন্ন বিভাগের পালাক্রম বজায় রাখার কথাও বলা আছে। যিনি অভিযোগ করেছেন তিনি শুধু অধ্যাপকদের জ্যেষ্ঠতার ব্যাপারটিই আমলে নিয়েছেন, বিভাগের পালাক্রমের ব্যাপারটি নেননি।'


ডিন নিয়োগ প্রক্রিয়া ও রিটের ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী বলেন, 'রিটের বিষয়ে জেনেছি। আমরা আইনের ধারা অনুযায়ী ডিন নিযুক্ত করেছি। এ ব্যাপারে কারো দ্বিমত থাকলে তিনি রিট করতে পারেন। আমরা রিট খারিজে ব্যবস্থা নিবো।'


বিবার্তা/আল আমিন/জাহিদ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com