সারি সারি প্রদীপ প্রজ্জ্বলন আর দেবী শ্যামার আর্চনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো শ্রী শ্রী শ্যামা পূজা বা দীপাবলী পূজার আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে।
রবিবার সন্ধ্যা থেকে (২৭ অক্টোবর) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান চত্বরে অস্থায়ী পূজামণ্ডপে শিক্ষার্থীরা বিকেল থেকেই পূজা আর্চনা শুরু করেন। এরই সাথে পুরো ক্যাম্পাসে সহস্র প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে স্বর্গীয় পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনদের স্মরণ করেন। হিন্দু ধর্মালম্বভদের মতে এটিকে বলা হয় দীপাবলী বা দেওয়ালি।
হিন্দু সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব এই শ্রী শ্রী শ্যামা পূজা। কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে সাধারণত শ্যামা পূজা বা কালীপূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। হিন্দু পূরাণ মতে কালী দেবী দুর্গারই একটি শক্তি। সংস্কৃত ভাষার ‘কাল’ শব্দ থেকে কালি নামের উৎপত্তি। কালী পূজা হচ্ছে শক্তির পূজা। জগতের সকল অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে শুভশক্তির বিজয়। কালী দেবী তার ভক্তদের কাছে শ্যামা, আদ্য মা, তারা মা, ভদ্রকালী, দেবী মহামায়াসহ বিভিন্ন নামে পরিচিত। দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনের মাধ্যমে ভক্তের জীবনে কল্যাণের অঙ্গীকার নিয়ে পৃথিবীতে আগমন ঘটে দেবী শ্যামার। তাই তিনি শান্তি, সংহতি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সংগ্রামের প্রতীক।
শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী বৈশাখী কুণ্ডু জানান, এবারই প্রথমবারের মতো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এ পূজার আয়োজন করা হয়। দুর্গাপূজার মতো কালীপূজাতেও মণ্ডপে মৃন্মময়ী প্রতিমা নির্মাণ করে পূজা করা হয়। মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত প্রস্তরময়ী ও ধাতুপ্রতিমাতেও কালীপূজা করা হয়। সন্ধ্যায় দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে মণ্ডপসহ পুরো ক্যাম্পাসে কয়েক হাজার প্রদীপ জ্বলানো হয়। মধ্যরাত্রে তান্ত্রিক পদ্ধতিতে মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে পূজা করা হয়। রাতে মণ্ডপে মণ্ডপে দেবী পূজার পাশাপাশি ছিল অঞ্জলি প্রদান, প্রসাদ বিতরণ, আরতি, ধর্মীয় সংগীত, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোকসজ্জাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি।
পূজা আয়োজক কমিটির সদস্য ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নিউটন হাওলাদার জানান, আমাদের উপাচার্য ড. মীজানুর রহমানের একান্ত প্রচেষ্টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আমরা প্রথমবারের মতো এই পূজার আয়োজন করেছি। এ পূজা আয়োজনের মাধ্যমে আমরা এ বার্তা দিতে চাই যে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের পরিবেশ ধর্মীয় সম্প্রীতির জন্য। এখানে সকল শিক্ষক-শিক্ষাথীর মাঝে ধর্মীয় সম্প্রীতি বিদ্যমান রয়েছে। আমরা তা আমাদের কথার মাধ্যমেই নয় কাজের মাধ্যমেও প্রমাণ করতে পেরেছি।
বিবার্তা/আদনান/রবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]