শিরোনাম
আবরার হত্যার বিচার দাবিতে বুয়েটে গণস্বাক্ষর
প্রকাশ : ১৪ অক্টোবর ২০১৯, ১৬:৫৮
আবরার হত্যার বিচার দাবিতে বুয়েটে গণস্বাক্ষর
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ভর্তি পরীক্ষার কারণে রবিবার ও সোমবার (১৪ অক্টোবর) আন্দোলন শিথিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। তবে আজ ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন আবরার হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা।


গণস্বাক্ষর শেষে আগমীকাল মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) থেকে আবার পুরোদমে আন্দোলনে নামবেন বলে জানিয়েছেন তারা।


আজ সকাল ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টার লিখিত ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সকাল থেকেই বুয়েট ক্যাম্পাসে অভিভাবকসহ ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ভিড় জমে। গত কয়েকদিনের থমথমে বুয়েট ভর্তি পরীক্ষার উৎসবের পরিবেশ ফিরে পায়।


এ সময় ক্যাম্পাসে শহীদ মিনারের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে পালিত এক কর্মসূচিতে আবরার হত্যার বিচারের দাবিতে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে আন্দোলনকারীরা। আর সেই ব্যানারে হাজারো শিক্ষার্থীকে স্বাক্ষর করতে দেখা গেছে।


এ সময় সাংবাদিকদের কেউ কেউ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন করেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নিয়েছে, তাহলে আন্দোলন কেন? জবাবে তারা জানায়, মেনে নেয়ার ঘোষণা আর বাস্তবায়ন এক নয়। আশ্বাস পেয়ে আমরা কৃতজ্ঞ, তবে দ্রুত বাস্তবায়ন দেখতে চাই।


তারা জানান, সবগুলো দাবি বাস্তাবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। বুয়েটের শিক্ষার পরিবেশ ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এ আন্দোলন করছি আমরা।


এদিকে আবরার হত্যার প্রতিবাদে চলমান আন্দোলন আজ সোমবার ভর্তি পরীক্ষায় প্রভাব ফেলেনি বলে জানিয়েছেন বুয়েট অধ্যাপক ভিসি সাইফুল ইসলাম।


তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে পরীক্ষা শেষ হয়েছে। মোট পরীক্ষার্থীর ৯০ শতাংশই পরীক্ষায় উপস্থিত ছিলেন। তারা স্বতঃস্ফুর্তভাবে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।


আজ ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে কয়েকটি কেন্দ্র পরিদর্শন করে এমন দাবি করেন বুয়েট উপাচার্য।


তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণে আমরা কাজ করছি। শিক্ষার্থীদের কয়েকটি দাবি ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন হয়েছে। বুয়েটে ছাত্র-শিক্ষকদের সাংগঠনিক রাজনীতি বন্ধ হয়েছে। আশা করি, দ্রুতই সংকট নিরসন হবে।’


বুয়েটের হলে হলে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।


প্রসঙ্গত ভারতের সাথে সম্পাদিত চুক্তি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় হত্যা করা হয় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে। ভারতের সাথে চুক্তির বিরোধিতা করে শনিবার বিকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন ফাহাদ। এর জের ধরে ৬ অক্টোবর রাতে শেরেবাংলা হলের নিজের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে তাকে ডেকে নিয়ে ২০১১ নম্বর কক্ষে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পিটুনির সময় নিহত আবরারকে ‘শিবিরকর্মী’ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা চালায় খুনিরা।


তবে আবরার কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন না বলে নিশ্চিত করেছেন তার পরিবারের সদস্যসহ সংশ্লিষ্টরা।


হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ না রাখতে সিসিটিভি ফুটেজ মুছে (ডিলিট) দেয় খুনিরা। তবে পুলিশের আইসিটি বিশেষজ্ঞরা তা উদ্ধারে সক্ষম হন। পুলিশ ও চিকিৎসকরা আবরারকে পিটিয়ে হত্যার প্রমাণ পেয়েছেন।


আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ইতোমধ্যে পুলিশ ১৯ জনকে গ্রেফতার করেছে। ১৩ জনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। রবিবার পর্যন্ত চারজন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।


গ্রেফতার আসামিরা হলেন- বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান ওরফে রাসেল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফুয়াদ হোসেন, অনীক সরকার, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, ইফতি মোশারেফ, বুয়েট ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান ওরফে রবিন, গ্রন্থ ও প্রকাশনা সম্পাদক ইশতিয়াক আহমেদ ওরফে মুন্না, ছাত্রলীগের সদস্য মুনতাসির আল জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম ওরফে তানভীর, মোহাজিদুর রহমানকে, শামসুল আরেফিন, মনিরুজ্জামান ও আকাশ হোসেন, মিজানুর রহমান (আবরারের রুমমেট), ছাত্রলীগ নেতা অমিত সাহা এবং হোসেন মোহাম্মদ তোহা।


এদের মধ্যে ১৩ জনকে স্থায়ী বহিষ্কার করেছে ছাত্রলীগ। আর ১৯ জনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।


বিবার্তা/এরশাদ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com