বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে অন্যায়ভাবে সাময়িক বহিষ্কার করার দায়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. খোন্দকার মো. নাসিরউদ্দিনকে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে অপসারণের আল্টিমেটাম দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন এবং প্রতিবাদ সমাবেশে এ ঘোষণা দেয় সংগঠনটি।
মানববন্ধনে আল মামুন বলেন, বশেমুরবিপ্রবিতে কোনো ছাত্র সংগঠনকে কমিটি করতে দেয়া হয় না। মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কমিটিকে সেখানে কাজ করতে দেয়া হয় না, কোনো প্রগতিশীল সংগঠনকে কাজ করতে দেয়া হয় না। আমরা মনে করি খোন্দকার নাসির উদ্দিন মানসিক রোগী। তাকে মানসিক হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া উচিত। এসময় তিনি সরকারের কাছে ভিসিকে দ্রুত অপসারণ করে মানসিক হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়ে মানসিক চিকিৎসা দেয়ার অনুরোধ জানান। এর মাধ্যমে সেখানকার শিক্ষার্থীরা মুক্তি পাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি রায়হানুল ইসলাম আবির বলেন, অবিলম্বে জিনিয়ার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যথায় আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি সারা দেশের সাংবাদিকদের সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন গড়ে তুলব।
মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের আহ্বায়ক অধ্যাপক আ.ক.ম জামাল উদ্দিন বলেন, গোপালগঞ্জে ভিসি নাসির উদ্দিন কয়েক বছর ধরে স্বৈরাচারি শাসন প্রতিষ্ঠা করেছেন। গণমাধ্যমে তার বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ লিখিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিয়ন্ত্রক সংস্থা মঞ্জুরি কমিশন কিংবা শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘুমিয়ে আছে কি না সেই প্রশ্ন রাখেন তিনি।
তিনি বলেন, শুধু মত প্রকাশের জন্য ফাতেমা তুজ জিনিয়া নামে এক শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে ভিসি। ডেঙ্গু নিয়ে লেখার কারণে ত্রিপলি বিভাগের পাঁচজনকে বহিষ্কার করে নাসির উদ্দিন। তার সীমাহীন দুর্নীতির কথা, নারী কেলেঙ্কারীর কথা, ভর্তি বাণ্যিজের কথা প্রকাশ হয়েছে। এত কিছুর পরেও একজন ভিসি কিভাবে থাকতে পারেন, তা আমাদের বোধগম্য নয়।
ছাত্র জীবনে নাসির উদ্দিন স্বাধীনতাবিরোধী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন মন্তব্য করে জামাল উদ্দিন বলেন, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি ছাত্রদলের নেতা ছিলেন, যুক্তরাজ্যে তিনি ছাত্রদলের সংগঠক ছিলেন। শুধু আত্মীয়তার কারণে একজন স্বাধীনতাবিরোধী বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের তো নয়, জাতির জনক যেখানে শুয়ে আছেন সেখানে তিনি থাকতে পারেন না।
অধ্যাপক আ.ক.ম জামাল উদ্দিন বলেন, স্বাধীনতা বিরোধী কুলাঙ্গার ভাইস চ্যান্সেলরকে আমরা থাকতে দিব না। সরকার ও শিক্ষামন্ত্রণালয়ের প্রতি তিনি কুলাঙ্গার নাসির উদ্দিনকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে অপসারণ করার আহ্বান জানান।
২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়ে তিনি বলেন, তাকে অপসারণ করা না হলে আমরা গোপালগঞ্জে গিয়ে তার প্রশাসন ঘেরাও করব। এসময় তিনি নাসির উদ্দিনের অপসারণের দাবিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হবে উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য, গোপালগঞ্জে শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী জিনিয়ার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে লিখেছিলেন-‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান কাজ কি?’ এই লেখার কারণে গত ১১ সেপ্টেম্বর তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। জিনিয়ার বহিষ্কারের কারণে ওই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
বিবার্তা/রাসেল/জাই
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]