প্রতি বছরের মতো এবারও আমাদের দরজায় সমাগত সংযমের মাস রমজান। এ মাসে মুসলমানরা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নির্দেশে দিনভর অনাহারে থেকে রোজা পালন করবেন। এ থেকে উপলব্ধি করবেন দরিদ্র অনাহারী মানুষের ক্ষুধার কষ্ট। প্রবল ক্ষুধা উপেক্ষা করে থাকেন অনাহারে, যা রোজাদারকে দেবে সংযমের শিক্ষা। দেবেন সংবৎসরের সঞ্চিত অর্থের একটা ক্ষুদ্র অংশ যাকাত আর নামেমাত্র ফিতরা। এর মাধ্যমে রোজাদার পাবেন ত্যাগ ও সামাজিক দায়িত্ববোধের শিক্ষা।
রোজা পালনের আধ্যাত্মিক দিক বাদ দিলে এ-ই তো জাগতিক দিক। খুব কি কঠিন কিছু?
মোটেই নয়। একজন মানুষকে সামাজিক মানুষ হয়ে উঠতে হলে এটুকু গুণ তো ধারণ করতেই হয়। দুঃখের সাথে বলতে হয়, আমরাও সমাজে বাস করি, কাজেই আমরাও সামাজিক মানুষ। কিন্তু কী ধরনের সমাজ আমরা গড়ে তুলেছি, আর আমরাই বা কেমনতর ''সামাজিক'' ও ''মানুষ'' তা নানা উৎসবে-উপলক্ষে বড্ড বেশি নগ্ন হয়ে প্রকাশ হয়ে পড়ে। যেমন, পবিত্র রমজান মাস এলে। আত্মশুদ্ধি ও আত্মসংযমের এ মাস। অথচ মাসটি আসার আগে থেকেই আমরা শুরু করি পণ্য মজুদ ও অকারণ মূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমে মুনাফাবাজির নোংরা খেলা।
ব্যবসায় মুনাফা করা হালাল বা বৈধ। কিন্তু শুধু মুনাফা করার জন্য চক্র (সিন্ডিকেট) বানিয়ে, কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে মানুষের পকেট কাটার নাম নিশ্চয়ই ব্যবসা নয়। দ্ব্যর্থহীনভাবে এর নাম মুনাফাবাজি। এ মুনাফাবাজি হারাম বা অবৈধ।
আমরা নির্দ্বিধায় বছরের বিভিন্ন সময় এবং পবিত্র মাস রমজান এলে শতগুণ উৎসাহে এ হারামখোরীতে মেতে উঠি। আমরা ভুলে যাই আল্লাহর নিষেধ, তাঁর নবী (সাঃ)-এর জীবনাদর্শ। ভুলে যাই মানবিক মূল্যবোধ ও সামাজিক দায়।
সবকিছু ভুলে গিয়েও আমরা ভাবি, আমরাও মানুষ। আমাদের সমাজ আছে, সংসার আছে, সভ্যতা আছে। আর কী চাই?
কেউ কি বলবেন, বোধহীন পশুর মতো হালাল-হারাম বাছবিচারহীন আমরা কি আসলেই মানুষ? যদি মানুষ হয়েই থাকি, তবে কতটুকু মানুষ?
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]