প্রকল্পটি ২০১৩ সালে বর্তমান সরকারেরই নেয়া। ওই বছরের অক্টোবরে এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অতঃপর ২০১৬ সালে চট্টগ্রাম মহানগরীর বিবিরহাটে নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয় মডার্ন ফুড টেস্টিং ল্যাবরেটরির। কিন্তু তার পর থেকে দীর্ঘ দু'বছর পেরিয়ে গেলেও কেবল একজন পরিচালক নিয়োগ না-করায় ল্যাবটি এক রকম অলস পড়ে আছে। আর এ সুযোগে খাদ্য ও খাদ্যপণ্য নকল ও ভেজালকারীরা মহাসুখে তাদের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।
একটি জাতীয় ইংরেজি দৈনিকে এ খবর প্রকাশিত হয়েছে। এরকম একটি খবর পড়ে কেউ উদ্বিগ্ন না-হয়ে পারে না। খবরে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ফুড ইন্সপেক্টররা যেসব খাদ্যপণ্যের নমুনা জব্দ করে ল্যাবে জমা দেন, সেগুলো পরীক্ষা করে দেখা যায়, প্রায়-সবই হয় ভেজাল, নতুবা নিম্নমানের। কিন্তু তা সত্ত্বেও ল্যাবে কোনো পরিচালক না-থাকায় ওই নলল-ভেজালকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া যায় না। কেননা, পরিচালকই ল্যাবের সাইনিং অথরিটি বা স্বাক্ষরদাতা কর্তৃপক্ষ। তাঁর স্বাক্ষর ছাড়া কোনো ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব নয়। মজার ব্যাপার হলো, এ ল্যাবে সেই ''তিনিই'' নেই। দু'বছরেও সেই পদে কাউকে নিয়োগ দেয়া সম্ভব হয়নি। কেন হয়নি বা হচ্ছে না, তাও জানা সম্ভব হয়নি।
এ সুযোগটিই নিচ্ছে খাদ্যপণ্য নকল-ভেজালকারীরা। ল্যাবের একজন কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে জানান, ল্যাবের নমুনা পরীক্ষায় মিষ্টিতে হাইড্রোজ ও রঙ, দুধে ইউরিয়া, গ্লুকোজ, সোডিয়াম ক্লোরাইড, স্যাকারিন, ডিটারজেন্ট, বরিক এসিড ও ফরমালিন, ফলমূলে ফরমালিন, কারবাইড ও এথিলিন, কোমল পানীয়তে কার্বন-ডাই-অক্সাইড, ফসফরিক এসিড, বেনজোইক এসিড ও গ্লাইকোলিন, মুড়িতে ইউরিয়া, মধুতে তরল গ্লুকোজ (যা খাওয়ার জন্য নয়) এবং হলুদে কাঠের গুঁড়ো ইত্যাদি পাওয়া গেছে।
সংক্ষিপ্ত এ ছবিটি থেকেই আমরা বুঝতে আমরা বুঝতে পারি, পরিস্থিতি কতোটা ভয়ঙ্কর। আমাদের প্রশ্ন, একজন পরিচালক নিয়োগদান কি এতই কঠিন কাজ? জানতে ইচ্ছে করে, এত অর্থ ব্যয়ে যে প্রকল্প বাস্তবায়িত হলো, সেটিকে পূর্ণ মাত্রায় কার্যকর করতে এক-দু'টি ফোঁড় দিতে কেন এ বিলম্ব? এর কোনো ব্যাখ্যা কি সংশ্লিষ্টদের কাছে আছে?
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]