শিরোনাম
দেশের শীর্ষস্থানীয় পত্রিকার সম্পাদককে হত্যার পরিকল্পনা করছিল জঙ্গিরা : র‌্যাব
প্রকাশ : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৪:১০
দেশের শীর্ষস্থানীয় পত্রিকার সম্পাদককে হত্যার পরিকল্পনা করছিল জঙ্গিরা : র‌্যাব
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

রাজধানীর উত্তরা থেকে জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। একটি জাতীয় পত্রিকায় বিবাহ সংক্রান্ত হাদিস নিয়ে কটুক্তি করায় ওই পত্রিকার সম্পাদককে তারা হত্যার পরিকল্পনা করে। কিন্তু ওই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আগেই তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান।


আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর কাওরানবাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানান তিনি।


মুফতি মাহমুদ খান জানান, গত ২৮ জানুয়ারি রাজধানীর আশুলিয়া থেকে আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের সক্রিয় সদস্য মো. আব্দুস ছোবহান ওরফে হাবিবকে (২৮) গ্রেফতার করে। তার দেয়া তথ্যমতে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে রাজধানী উত্তরা এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এ সময় মো. শাহরিয়ার নাফিস ওরফে মো. আম্মার হোসেন (২০), মো. রাসেল ওরফে সাজেদুল ইসলাম গিফারী (২৪), মো. রবিউল ইসলাম ওরফে নুরুল ইসলাম (২৪) ও মো. আব্দুল মালেক (৩১) নামের চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে উগ্রবাদী বই, মোবাইল ও ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। পরে তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ সশয় তারা আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সক্রিয় সদস্য বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছে।


তিনি জানান, গ্রেফতারকৃতদের টার্গেট বিভিন্ন অনলাইন এ্যাকটিভিস্ট, ব্লগাররা। তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একটি এ্যাকটিভিস্ট গ্রুপে ছতদ্মবেশ নিয়ে যুক্ত হয়ে ওই গ্রুপের সদস্যদের চিহ্নিত করে হত্যার চেষ্টা করছিল তারা।


তিনি আরো জানান, গ্রেফতার শাহরিয়ার নাফিস ওরফে আম্মার ৭ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর দুই বছর বিভিন্ন মাদরাসায় পড়াশোনা করে। পরে আবার হাইস্কুলে পড়া শুরু করে। ২০১৭ সালে অনলাইনে (ফেসবুক) আমানের সঙ্গে পরিচয়ের মাধ্যমে এবিটিতে যোগদান করে সে। আমান তার নিয়ন্ত্রক। আমানের নির্দেশনায় তিনি ৪-৫ টি ফেসবুক গ্রুপ তৈরি করে প্রচার-প্রচারণা চালাতো ও জঙ্গি সদস্য সংগ্রহের কাজ করা শুরু করে। এভাবে ৭-৮ জনকে এবিটির সঙ্গে যুক্ত করতে সক্ষম হয় নাফিস। শাহরিয়ার এবিটির টার্গেট কিলিং মিশনের মতাদর্শে উদ্ধুদ্ধ হয়ে অনলাইনে বিভিন্ন অ্যাক্টিভিস্টদের উপর নজরদারি করা শুরু করে।


তিনি বলেন, শাহরিয়ার ছদ্মবেশে একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নাস্তিক গ্রুপ নামে একটি অ্যাক্টিভিস্ট গ্রুপে ঢুকে পড়ে। সংগঠনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক অ্যাক্টিভিস্ট গ্রুপের এক সদস্যকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এ মিশনে শাহরিয়ার ও অপর দুই সদস্যকে দায়িত্ব দেয়া হয়।


এ উদ্দেশে গত সপ্তাহে ঢাকা থেকে একজন ধারালো অস্ত্রসহ এবং অপর সদস্য বরগুনা থেকে বগুড়া গমন করে। বগুড়া গমনের পর তারা অনলাইনে ফোন করে ওই অ্যাক্টিভিস্ট সদস্যকে সাক্ষাত করতে বলে। কিন্তু ওই অ্যাক্টিভিস্ট সাক্ষাত না করায় তাদের মিশন ব্যর্থ হয়।


র‌্যাবের ওই কর্মকর্তা বলেন, রাসেল ওরফে সাজেদুল ইসলাম গিফারী ২০১৩ সালে এসএসসি পাস করে একটি গার্মেন্টসে চাকরি নেয়। ফেসবুকে উগ্রবাদী পোস্ট ও ভিডিও দেখে অন্যদের সঙ্গে এ সম্পর্কে আলোচনা করতে শুরু করে। ২০১৭ সালের মাঝামাঝি ফেসবুকে অ্যাক্টিভিস্ট গ্রুপে নজরদারির নিয়ন্ত্রক আমানের মাধ্যমে এবিটিতে যোগদানে উদ্বুদ্ধ হয়। ছদ্মনামে একটি কনস্ট্রাকশন ফার্মে নির্মাণ শ্রমিক রাসেল আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের এ অংশের সমন্বয়ক। তিনি নিয়ন্ত্রকের নির্দেশনায় বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ, তাদের কাছে অর্থ সংগ্রহ ছাড়াও সদস্য সংগ্রহের দায়িত্ব পালন করে আসছিল।


অন্যদিকে রবিউল ইসলাম ২০১০ সালে দাখিল পাস করেন। অতপর তিনি বগুড়া পলিটেকনিকে ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হয়ে ২০১৫ সালে শেষ করে। ২০১৮ সালে শাহরিয়ারের মাধ্যমে জঙ্গি সংগঠনে যোগদান করে রবিউল। আব্দুল মালেক পেশায় একজন প্রাইভেট গাড়ি চালক। ২০১৮ সালে রাসেলের মাধ্যমে বর্ণিত গ্রুপে যোগদান করে সে।’


বিবার্তা/খলিল/শারমিন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com