সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার অর্থ কেলেঙ্কারির প্রমাণ পেয়েছে দুদক। ফারমার্স ব্যাংক থেকে চার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে সিনহার ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তরের ঘটনায় জালিয়াতির প্রমাণ পেয়েছে সংস্থাটি।
দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বৃহস্পতিবার তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কারও নাম উল্লেখ না করে বলেন, ফারমার্স ব্যাংকের দুটি একাউন্ট থেকে চার কোটি টাকা ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে জালিয়াতির আশ্রয় নেয়া হয়েছে।
ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে মোহাম্মদ শাহজাহান ও নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা নামে দুই কথিত ব্যবসায়ী চার কোটি টাকা ঋণ পেয়েছিলেন। সেই টাকা অন্য আরেক ব্যবসায়ী হয়ে বিচারপতি সিনহার বাড়ি বিক্রি বাবদ তার ব্যাংক হিসাবে ঢোকে বলে অভিযোগ পাওয়ার পর তার তদন্তে নামে দুদক।
দুদক প্রথম থেকে ‘গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি‘র আড়ালে বিচারপতি সিনহার নাম উহ্য রাখলেও দুদকে জিজ্ঞাসাবাদের পর কথিত ওই দুই ব্যবসায়ীর আইনজীবী বিচারপতি সিনহার সঙ্গে লেনদেনের কথাই বলেন।
এর মধ্যেই বিচারপতি সিনহার ভাইয়ের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগের তদন্ত শুরুর কথা জানায় দুদক। দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ এনে সাবেক এই প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে একটি মামলাও হয়।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ফারমার্স ব্যাংকের দুটি একাউন্ট থেকে চার কোটি টাকা ঋণের ব্যাপারে আমরা তদন্ত করেছি। তদন্ত শেষ হয়ে গেছে। অনেকের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে বা চিহ্নিত করা হয়েছে। ঋণ প্রক্রিয়ায় জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। আমরা সেগুলো বিচার বিশ্লেষণ করছি।
তদন্তে পাওয়া বিষয়বস্তু তুলে ধরে তিনি বলেন, দুটি একাউন্ট থেকে ঋণ প্রক্রিয়া এবং এই টাকা মানি লন্ডারিং বা বিভিন্ন জায়গায় যাওয়া, নগদ উত্তোলন এসব বিষয়ে অনেক কিছু এসেছে।
আইনজীবীর ভাষ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালের মে মাসে বায়নার সময় বিচারপতি সিনহাকে দুই কোটি টাকা দেয়া হয়েছিল। এরপর ৮ নভেম্বর দুটি পে-অর্ডারের মাধ্যমে বাকি চার কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়।
সেই ৮ নভেম্বরই নিরঞ্জন ও শাহজাহান ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে পাওয়া ঋণের দুই কোটি করে চার কোটি টাকা ফারমার্স ব্যাংক থেকে তোলেন। সেদিনই তারা ওই টাকা পে-অর্ডারের মাধ্যমে বিচারপতি সিনহার ব্যাংক হিসাবে জমা দেন।
নিরঞ্জন সাহা শান্ত্রী রায়ের স্বামী রনজিতের চাচা; আর শাহজাহান রনজিতের বন্ধু। তাদের সবার বাড়ি টাঙ্গাইলে।
গত ৬ মে নিরঞ্জন ও শাহজাহানকে জিজ্ঞাসাবাদের পর ২৬ সেপ্টেম্বর ফারমার্স ব্যাংকের তৎকালীন চেয়ারম্যান এম ওয়াহিদুল হকসহপাঁচ কর্মকর্তাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেন দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন।
ঋণ অনিয়মের সঙ্গে সাবেক প্রধান বিচারপতি জড়িত কি না- এ প্রশ্নে ইকবাল মাহমুদ বলেন, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি থাকুক, আর যেই থাকুক। যাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে বা যাবে, তাদের বিরুদ্ধেই আমরা ব্যবস্থা নেব।
বিবার্তা/রোকন/কাফী
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]