রাজধানীর মগবাজারের বৈকালী আবাসিক হোটেলে শ্যালিকা বৃষ্টি আক্তারকে (১৬) হত্যার অভিযোগে দুলাভাই সুমনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। মঙ্গলবার রাতে তাকে মিরপুরের পাইকপাড়া থেকে গ্রেফতার করা হয়।
এরপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ সময় সে হত্যার দায় স্বীকার করে এবং শ্যালিকা প্রেমে রাজি না হওয়াতে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে।
বুধবার দুপুরে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে এমন তথ্য জানিয়েছেন র্যাব ৩-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোঃ এমরানুল হাসান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, গত ১৬ জুলাই সাড়ে ১১টার দিকে ওই হোটেলের ৪০৭ নম্বর রুম থেকে বৃষ্টির লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে হোটেল কর্তৃপক্ষ জানায়, রিয়াজ ওরফে সুমন এবং প্রিয়া ওরফে বৃষ্টি নামের দুইজন স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে হোটেল কক্ষটি ভাড়া নিয়েছিল। এছাড়াও এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বৃষ্টির পিতা আনোয়ার হোসেন (৫০) বাদি হয়ে রমনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহার নামীয় একমাত্র আসামি ভিকটিমের আপন দুলাভাই মোঃ সুমন (২৯)।
এমরানুল বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজধানীর মিরপুরের পাইকপাড়া থেকে বৃষ্টি হত্যা মামলার একমাত্র এজাহারভুক্ত আসামি সুমনকে গ্রেফতার করা হয়। সুমন বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার শাকরাল গ্রামের বাসিন্দা সোনা মিয়ার ছেলে।
গ্রেফতারের পর তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে জানিয়ে র্যাবের ওই কর্মকর্তা বলেন, সুমন হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে। সে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের গাড়িচালক। ২০১০ সালে ভিকটিম বৃষ্টির মেজো বোন হাসনার সঙ্গে সুমনের বিয়ে হয়। বিগত তিন-চার বছর ধরে সে তার শ্যালিকাকে উত্যক্ত করত এবং পরবর্তীতে একপর্যায়ে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে যায়।
ঘটনাটি জানাজানি হলে পারিবারিকভাবে বিষয়টি নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করা হয়। বোনের সংসার বাঁচানোর তাগিদে সুমনের কাছ থেকে ধীরে ধীরে দূরে সরে আসতে থাকে বৃষ্টি। এ ঘটনায় সুমনের মনে প্রচণ্ড ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে বৃষ্টির বিয়ের ব্যাপারে অন্যত্র যোগাযোগ করা হলে তা সুমনকে আরো ক্ষিপ্ত করে তোলে। সুমন বৃষ্টিকে হুমকি দেয় যে, তার সঙ্গে বৃষ্টির ঘনিষ্ট সম্পর্কের অনেক ছবি ও ভিডিও রয়েছে। এ ব্যাপারে চূড়ান্ত ফয়সালার জন্য বৃষ্টিকে ১৬ জুলাই বৈকালী হোটেলে নিয়ে আসে সুমন এবং স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ওই হোটেলের ৪০৭ নম্বর রুম ভাড়া নেয়।
এ সময় হোটেল কক্ষে পূর্বের ঘটনা নিয়ে উভয়ের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ ও ঝগড়া হয় তাদের মধ্যে। ঝগড়ার এক পর্যায়ে সুমন জোরপূর্বক দৈহিক সম্পর্কে লিপ্ত হতে চাইলে বৃষ্টি রাজী না হওয়ায় সুমন আরো ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। এক পর্যায়ে সুমন বৃষ্টির ওড়না দিয়ে বৃষ্টির গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে। পরবর্তীতে হত্যা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য বৃষ্টির ওড়নাটি সুমন তার দাঁত দিয়ে কেটে ওড়নার একাংশ গলায় পেঁচিয়ে এবং অন্য অংশ হোটেলের ফ্যানের সাথে বেঁধে রেখে পালিয়ে যায়।
সুমন নিজেকে আত্মগোপন করতে ঢাকা ত্যাগের প্রস্তুতি নিচ্ছিল জানিয়ে র্যাবের ওই কর্মকর্তা বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বিবার্তা/খলিল/জাকিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]