শিরোনাম
প্রতারণা করে ২৭ বিয়ে!
প্রকাশ : ১৪ জুলাই ২০২১, ১৮:০৯
প্রতারণা করে ২৭ বিয়ে!
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

দালালদের কোরবানির গরু উপহার দিয়ে রোগী টানছেন কুখ্যাত খুনি এরশাদ শিকদারের শিষ্য প্রতারক সাহাদৎ হোসেন মামুন। শুধু তাই নয়, সাহাদৎ হোসেন মামুন প্রতারণার উদ্দেশ্যে এ পর্যন্ত ২৭টি বিয়ে করেছেন। বিয়ের পর মূলত যৌতুক ও টাকা আদায় করে তাদের জিম্মি করা হতো। তাদের দিয়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালাতেন। প্রতারণার শিকারদের মধ্যে অধিকাংশই হাসপাতালের নার্সিং পেশার সঙ্গে জড়িত নারী। এছাড়া হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসা রোগী ও রোগীর আত্মীয়দেরও তিনি প্রলোভনে ফেলে বিয়ে করছেন।


বুধবার (১৪ জুলাই) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‍্যাব-২ এর অধিনায়ক (সিও) খন্দকার সাইফুল আলম।


তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন হাসপাতালের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগে করে রোগী ভাগিয়ে আনা হতো রাজধানীর শ্যামলীর ন্যাশনাল হেলথ কেয়ার হাসপাতালে। এ কাজে অ্যাম্বুলেন্সচালক ও হাসপাতালের দালালরা পেতেন নির্দিষ্ট কমিশন। তারা রোগীকে উন্নত চিকিৎসার প্রলোভন দিয়ে শ্যামলীর ওই হাসপাতালে ভর্তি করলেই শুরু হতো প্রতারণার প্রথম অঙ্ক। অপ্রয়োজনীয় টেস্টসহ নানা খাতে রোগীদের থেকে হাতিয়ে নেয়া হতো মোটা অংকের টাকা।


গতকাল মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টায় রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানাধীন ন্যাশনাল হেলথ কেয়ার জেনারেল হাসপাতাল থেকে ৪ প্রতারককে গ্রেফতার করে র‍্যাব-২ এর একটি দল।


পুলিশের এলিট ফোর্স র‍্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় মূলহোতা সাহাদতের কাছ থেকে জব্দ করা হয় ৩ লাখ ৫০ হাজার জাল টাকা ও ৫৫০ পিস ইয়াবা। তিনি বাদে গ্রেফতার অন্য প্রতারকরা হলেন- শ্যামলীর ন্যাশনাল হেলথ কেয়ার হাসপাতালের স্টাফ মহিন উদ্দিন মামুন (৩৬), রহমত উল্লাহ্ (৩২) ও আকরাম হোসেন (৫২)।


র‍্যাব-২ এর সিও খন্দকার সাইফুল আলম বলেন, মহামারি করোনাকালেও দালালচক্র রাজধানীর কিছু হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগসাজশে সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে এনে ভর্তি করছে। মোটা অংকের কমিশনের মাধ্যমে রোগীদের হেনস্থা করছে তারা। এছাড়া বিভিন্ন অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেটও রোগী রোগীদের হয়রানির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা অনেক ক্ষেত্রে রোগী পরিবহনে উচ্চ ভাড়া দিতে বাধ্য করে।


এমন পরিস্থিতিতে র‍্যাব-২ এর ছায়া তদন্তে দালালচক্রের হোতা সাহাদৎ হোসেন ওরফে মামুনের নাম উঠে আসে বলে জানান সিও সাইফুল। তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে ও তদন্তে জানা যায়- উন্নত চিকিৎসার নামে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল থেকে দালালরা রোগী এনে আইসিইউ’তে ভর্তি করে। পরে বিভিন্ন চেকআপের নামে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়।


চক্রটির কৌশল সম্পর্কে র‍্যাব-২ এর সিও বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তের হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে ভালো যোগাযোগ আছে চক্রটির। নির্দিষ্ট কমিশনের বিনিময়ে তারা বেসরকারি হাসপাতালে রোগী পাঠায়। জেলা শহরের অ্যাম্বুলেন্সচালক এবং হাসপাতালের দালালরা এ চক্রে কাজ করে মোটা অংকের কমিশন নেয়।


এছাড়াও দালাল ও অ্যাম্বুলেন্সচালকদের আকর্ষণীয় কমিশন দিতে সাহাদৎ। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে তারা রোগী ভাগিয়ে আনতেন। কমিশনের বাইরে উৎসবে-পার্বণে দিতেন বিশেষ অফার। এরই ধারাবাহিকতায় ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিশেষ বিশেষ দালাল ও অ্যাম্বুলেন্সচালককে কোরবানির গরু উপহার দেন তিনি।


এদিকে প্রতারক সাহাদৎ হোসেন মামুন খুলনা অঞ্চলের বহুল আলোচিত ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আসামি এরশাদ শিকদারের সহযোগী। এরশাদ শিকদারের ফাঁসির পর মামুন পেশা বদলে ফেলেন। ঢাকায় এসে হাসপাতাল চক্রের দালালীতে শক্ত অবস্থান গড়েন। এছাড়া মাদক ও জাল টাকার ব্যবসাও করছিলেন। তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতনের একটি মামলা রয়েছে। আটকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন র‍্যাব-২ এর অধিনায়ক (সিও) খন্দকার সাইফুল আলম।


বিবার্তা/খলিল/জাই

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com