শিরোনাম
ধর্ষণের অভিযোগে জেলে, বিয়ের পর স্ত্রী-সন্তানকে হত্যা : সিআইডি
প্রকাশ : ১৩ জুলাই ২০২১, ১৮:১৩
ধর্ষণের অভিযোগে জেলে, বিয়ের পর স্ত্রী-সন্তানকে হত্যা : সিআইডি
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

বরগুনার পাথরঘাটা এলাকার সুমাইয়া (১৮) নামে এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় জেলে যান শাহিন মুন্সি (২১)। তিন মাস হাজতবাসের পর শাহিন জামিনে বেরিয়ে বিয়ে করেন ওই সুমাইয়াকে। বিয়ের পরে দাম্পত্য কলহের জের ধরে একদিন স্ত্রী ও ৯ মাসের কন্যাকে হত্যা করে মাটিচাপা দিয়ে পালিয়ে যান শাহিন মুন্সি।


মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) মুক্তা ধর।


তিনি জানান, চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার তদন্তের ধারাবাহিকতায় স্বল্পতম সময়ে সোমবার (১২ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রামের বন্দর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে শাহিন মুন্সিকে গ্রেফতার করে সিআইডি। গ্রেফতার শাহিন মুন্সি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রী-সন্তানকে হত্যা করে মাটি চাপা দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।


তিনি জানান, গত ৩০ জুন সুমাইয়া পাথরঘাটার হাতেমপুর এলাকার পৈত্রিক বাড়িতে দাওয়াত খেয়ে সন্ধ্যায় শ্বশুরবাড়িতে ফেরেন। পরে ২ জুলাই সুমাইয়ার ছোট বোন সুমাইয়ার খোঁজ জানতে চাইলে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন জানায়, ওইদিন থেকে সুমাইয়াকে এবং আগের দিন থেকে তার কন্যাকে দেখা যায়নি। অনেক খোঁজাখুঁজির পর সুমাইয়ার শ্বশুরবাড়ি তার ঘরের পাশেই এক স্থানে মাটি আলগা দেখা যায়। ৩ জুলাই সকালে সেই স্থানের মাটি খুঁড়লে সুমাইয়া ও তার সন্তানের মরদেহ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় নিহত সুমাইয়ার বাবা রিপন বাদশা শাহিনকে প্রধান আসামি করে পাথরঘাটা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।


এসএসপি মুক্তা ধর বলেন, চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা গণমাধ্যমে এলে সিআইডির একটি বিশেষ দল ছায়া তদন্ত শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার (১২ জুলাই) চট্টগ্রামের বন্দর থানা এলাকা থেকে প্রধান আসামি শাহিন মুন্সিকে গ্রেফতার করা হয়। শাহিনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ১ জুলাই সন্ধ্যা থেকে সুমাইয়ার সঙ্গে তার স্বামীর প্রচণ্ড বাগবিতণ্ডা হয়। এর মধ্যে সুমাইয়া ঘর থেকে বের হলে শাহিনও তার পেছন পেছন বের হন। ঘরের পেছনে মাছ ধরার বর্শি রাখা ছিল। সুমাইয়া কিছু বুঝে উঠার আগেই বর্শির লাইলনের সুতা দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন শাহিন। এরপর শাহিন ঘরে ফিরলে তার ৯ মাস বয়সী শিশু সন্তান প্রচণ্ড কান্নাকাটি শুরু করলে তাকেও বাড়ির পাশের খালে নিয়ে চুবানো হয়। পরে ডোবার পাশেই কোদাল দিয়ে মাটি খুঁড়ে স্ত্রী-সন্তানকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যান শাহিন।


মুক্তা ধর বলেন, শাহিন স্ত্রী-সন্তানকে মাটিচাপা দিয়ে প্রথমে খুলনা পালিয়ে যান। এরপর সেখান থেকে আত্মগোপনের জন্য চট্টগ্রাম গিয়ে শুধু থাকা-খাওয়ার বিনিময়ে একটি গ্যারেজে চাকরি নেন। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আর কেউ জড়িত রয়েছে কি-না বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।


গত বছরের ১৪ জুলাই সুমাইয়াকে ধর্ষণের অভিযোগে শাহিন মুন্সির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় তিন মাস জেল খেটে জামিনে বেরিয়ে সুমাইয়াকেই বিয়ে করেন শাহিন মুন্সি।


এক প্রশ্নের জবাবে সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতার শাহিন জানিয়েছেন তার স্ত্রী-সন্তানকে হত্যার কোনো পূর্বপরিকল্পনা ছিল না। তবে তাদের সাত মাসের দাম্পত্য জীবন ভালো যাচ্ছিল না।


আগের ধর্ষণ মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে মুক্তা ধর বলেন, মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। ওই মামলায় অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে। সুমাইয়াকে বিয়ে করার শর্তে শাহিনের জামিন হয়েছিল কি-না সে সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র পাওয়া যায়নি। তবে শাহিনের জামিনের বিষয়ে বাদীপক্ষের কোনো আপত্তি ছিল না।


বিবার্তা /খলিল/জাই

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com