রাজধানী ঢাকার পল্টন এলাকায় বিস্ফোরণের ঘটনায় পাঁচ জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা সিলেটে হযরত শাহজালাল (র.) মাজারে জঙ্গি হামলার পরিকল্পনা করেছিল। এ জন্য তারা প্রস্তুতি নিচ্ছিল। খুব শিগগিরই জঙ্গিরা এ হামলা চালাতে চেয়েছিল। হামলার জন্য জঙ্গিদের অপারেশনাল টিমও নির্ধারণ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তাদের সেই পরিকল্পনা সফল হতে দেয়নি পুলিশ।
গত রবিবার থেকে আজ পর্যন্ত সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে জেএমবির সিলেট আঞ্চলিক কমান্ডার নাইমুজ্জামানও রয়েছেন। তিনি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বলে জানা গেছে। অন্য চার জনের মধ্যে রবি একই বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং সায়েম মদনমোহন কলেজের ছাত্র।
সিলেট পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, ঢাকা থেকে আসা পুলিশের বিশেষ দলটি রবিবার রাত থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত সিলেটের মিরাবাজার, টুকেরবাজার ও দক্ষিণ সুরমায় অভিযান চালিয়ে ওই পাঁচজনকে গ্রেফতার করে। তবে তিনি তাদের নাম পরিচয় জানাননি।
পুলিশ জানায়, গত রবিবার থেকে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি) এবং পুলিশ সদর দফতরের ল'ফুল ইন্টারসেপশন সেল (এলআইসি) যৌথভাবে এ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে মেট্রোপলিটন পুলিশও সহযোগিতা করে।
সিটিটিসির উপ-কমিশনার সাইফুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি রাজধানীর পল্টনে একটি বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। গ্রেফতারকৃতরা ওই বোমা বিস্ফোরণের সঙ্গে জড়িত। এখনো অভিযান এখনো চলছে। আগামীকাল সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে।
তিনি জানান, যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের ঢাকায় আনা হচ্ছে। বুধবার তাদের আদালতে হাজির করা হতে পারে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করা হবে।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, গ্রেফতারকৃত পাঁচ জনের মধ্যে নাইমুজ্জামান সিলেট জেএমবির আঞ্চলিক কমান্ডার হিসেবে কাজ করে আসছিল। সিলেট অঞ্চলে জঙ্গিদের সংগঠিত করা, তাদের প্রশিক্ষণ এবং জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করার মূল দায়িত্ব নাইমুজ্জামান পালন করতো। গ্রেফতার হওয়া নাইমুজ্জামান পুলিশকে জানিয়েছে, তাদের সিলেট শাহজালাল মাজারে হামলার পরিকল্পনা ছিল। বড় ধরনের হামলার পরিকল্পনা নিয়ে তারা ইতোমধ্যে প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছিল। ওই হামলা কখন হবে, কীভাবে করা হবে এর জন্য তাদের অপারেশনাল টিমও নির্ধারণ করা হয়েছিল।
এর আগে গত ২৬ জুলাই রাতে ঢাকার পল্টনে বঙ্গবন্ধু স্কয়ারের পাশে মোটরসাইকেল রেখে দায়িত্ব পালন করছিলেন ট্রাফিক পুলিশের একজন সার্জেন্ট। রাত পৌনে ৯টার দিকে মোটরসাইকেলের কাছে এসে তিনি দেখেন, সেখানে একটি পলিথিন ব্যাগ ঝুলছে। ভেতরে ‘গ্রেনেড সদৃশ’ একটি বস্তু দেখে তিনি দ্রুত পুলিশ বক্সে খবর দেন। পরে ঢাকা মহানগর পুলিশের বোমা নিস্ক্রিয়কারী দল গিয়ে ওই বোমা নিষ্ক্রিয় করে। তার একদিন আগে ২৫ জুলাই প্রায় একই সময়ে পল্টন মোড়ে কে বা কারা একটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। ওই ঘটনায় কেউ আহত হয়নি।
পুলিশ কর্মকর্তা সাইফুল বলেন, ওই ঘটনায় পল্টন থানায় মামলা হয়েছে এবং ওই মামলার তদন্ত করতে গিয়েই সিলেটে নব্য জেএমবির পাঁচ জনকে আমরা গ্রেফতার করেছি।
বিবার্তা/খলিল/জাই
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]