শিরোনাম
পর্নোগ্রাফির হাত থেকে সন্তানকে বাঁচাতে আমার প্রস্তুতি
প্রকাশ : ১৭ জানুয়ারি ২০১৭, ১৭:০৫
পর্নোগ্রাফির হাত থেকে সন্তানকে বাঁচাতে আমার প্রস্তুতি
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

সাত বছরের এক ছেলের বাবা আমি। এখনও পর্নোগ্রাফি বোঝে না সে। কিন্তু আর কয়েক বছরের মধ্যেই হয়তো জেনে যাবে। তখন তাকে কীভাবে সেই ভয়াল থাবার হাত থেকে রক্ষা করবো, তার উপায়গুলো এখনই একটু একটু করে জেনে নিচ্ছি৷


আধুনিক প্রযুক্তির কারণে পর্নোগ্রাফি বিষয়টি একেবারেই সহজলভ্য হয়ে গেছে। মনে আছে, আমি যখন ছোট ছিলাম তখন প্রথমবারের মতো পর্নোগ্রাফির মুখোমুখি হয়েছিলাম ‘চটি'র মাধ্যমে। আমার প্রজন্মের পাঠকরা নিশ্চয় বিষয়টির সঙ্গে পরিচিত। এরপর একে একে ভিসিআর, ভিসিডি আর ডিভিডির মাধ্যমে পর্নোগ্রাফির সঙ্গে পরিচয়। মাঝেমধ্যে সিনেমাহলে 'এক টিকিটে দুই ছবি' দেখা।


খোলামেলাভাবে বিষয়গুলো বলার একটিই কারণ – পাঠক, খেয়াল করে দেখুন, পর্নোগ্রাফির যে উৎসের কথাগুলো বললাম সেগুলো কিন্তু সহজলভ্য ছিল না। মফস্বলের ছেলে হওয়ায় ‘চটি' সহজে ম্যানেজ করা যেত না আর ভিসিআর, ডিভিডি এগুলোও সবার বাড়িতে ছিল না।


আর এখন? এখন তো স্মার্টফোন আর ইন্টারনেট আসায় চাইলেই পর্নোগ্রাফিক কন্টেন্ট দেখা যাচ্ছে। এটিই এ যুগের বাবা-মার চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, এখনকার বাচ্চারা ছোট্ট বেলা থেকেই মা-বাবার স্মার্টফোন নিয়ে গেম খেলছে। ইউটিউবে নিজেই কার্টুন ছেড়ে দেখছে। স্কুলে একা যেতে শুরু করা সন্তানের সঙ্গে যোগাযোগের কথা বিবেচনা করেই হোক কিংবা অন্য কোনো কারণে অল্প বয়সে সন্তানদের হাতে মোবাইল দিতে হচ্ছে। অর্থাৎ সেটি তাদের নিজেদের মোবাইল। সেই মোবাইল দিয়ে তারা কী করছে তা তো আর আমি-আপনি জানতে পারব না। স্কুলে বন্ধুদের সঙ্গে মিলে পর্নোগ্রাফির দিকে ঝুঁকে পড়াটা সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে মাত্র। বাচ্চারা নিজের মোবাইল ছাড়াও বাসার কম্পিউটার বা ট্যাবলেট দিয়েও পর্নোগ্রাফি দেখতে পারে।


এই অবস্থা থেকে সন্তানদের রক্ষায় তার সঙ্গে খোলামেলা আলোচনার বিকল্প নেই। তবে ওতেই সব হয়ে যাবে না। স্বাভাবিক প্রবৃত্তি থেকে সন্তান ওসব দেখতে চাইতেই পারে। সেক্ষেত্রে প্রযুক্তির সহায়তা নেয়া ছাড়া উপায় নেই। আমার নিজের জন্য আমি একটি করণীয় তালিকা করেছি। পাঠক, আপনিও দেখতে পারেন।


• বাসার কম্পিউটারের সার্চ ইঞ্জিন, যেমন গুগল‘সেফ সার্চ' মুডে রাখতে হবে৷ ইউটিউবের জন্যও ‘সেফ' মুড নির্বাচন করতে হবে।


• উইন্ডোজ আর ম্যাক অপারেটিং সিস্টেম – দুটোতেই ‘ফেমিলি সেফটি সেটিংস'-এর ব্যবস্থা আছে৷ সেগুলো ব্যবহার করতে হবে।


• আজকাল বেশ কিছু ফেমিলি সেফটি টুলস পাওয়া যায়।এগুলো ‘প্যারেন্টাল কন্ট্রোলস' নামেও পরিচিত। এর মাধ্যমে ইন্টারনেট থেকে আপনি যে কন্টেন্টগুলো পেতে চান না, সেগুলো ব্লক করতে পারেন।


• সন্তানের ইন্টারনেট ব্রাউজিংয়ের ইতিহাস মাঝেমধ্যে দেখতে হবে। মনে রাখতে হবে, আজকালকার ছেলেমেয়েরা বাবা-মায়েদের চেয়েও বুদ্ধিমান হয়ে থাকে। তাই আপনি যে শব্দগুলো ব্লক (অর্থাৎ সার্চের সময় যে শব্দগুলো ব্যবহার করলে কোনো কন্টেন্ট দেখাবে না) করেছেন আপনার সন্তান তা এড়াতে অন্য শব্দ ব্যবহার করতে পারে। যেমন ‘ওয়াকিং দ্য ডগ' হচ্ছে ‘সেক্স' এর স্ল্যাং। বাবা-মা হিসেবে আপনাকে এ ধরণের ‘আধুনিক' শব্দের সঙ্গে পরিচিত হতে হবে। তবে সমস্যা হচ্ছে, প্রতিদিনই এরকম নতুন নতুন শব্দ তৈরি হচ্ছে৷


• সন্তান একটু বড় হলে ‘সেক্সটিং'-এর প্রবণতা দেখা দিতে পারে। সেক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর তাদের মোবাইল ফোন পরীক্ষা করে দেখতে হবে।


• সন্তানের সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহারের ওপরও নজর রাখতে হবে।


জাহিদুল হকের ব্লগ থেকে


বিবার্তা/মৌসুমী/হুমায়ুন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com